মনে রাখার চেয়ে ভুলে যাওয়া কঠিন!

এপ্রিল ৬, ২০১৬

humanঢাকা জার্নাল : মাঝে মধ্যেই দেখা যায়, কোনো কিছু হাজার চেষ্টা করেও মনে করা যাচ্ছে না। পেটে আসছে কিন্তু মনে আসছে না, এমন পরিস্থিতিরও উদ্ভব হয়। খুব সহজে ভুলে যাওয়ায় মাঝে মধ্যে নিজের ওপরই চরম বিরক্ত হন কেউ কেউ।

কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, কোনো কিছু ভুলে যাওয়া যতটা সহজ, তার চেয়ে বেশি সহজ মনে রাখা। একটু ঘুরিয়ে বললে, মনে রাখার চেয়ে ভুলে যাওয়া কঠিন। অবিশ্বাস্য হলেও বিষয়টা সত্যি। এটি অবশ্য সবক্ষেত্রেই সঠিক নয়, স্বীকার করেছেন বিজ্ঞানীরা।

গত ২ এপ্রিল কগনিটিভ নিউরোসায়েন্স সোসাইটিতে বক্তব্য দেওয়ার সময় ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের ট্র্যাসি ওয়াং বলেছেন, ভুলে যাওয়ার প্রক্রিয়াটা বেশিরভাগ সময়ই পরোক্ষ। মানুষের অজান্তে তার মস্তিষ্ক ভুলে যাওয়ার প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন করে। কিন্তু কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে ভুলে যাওয়াটা ইচ্ছাকৃতও হতে পারে। আর এক্ষেত্রে তা অত্যন্ত কঠিন।

তিনি ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, ধরা যাক, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটা কিছু ভুলে যেতে চাইছেন কেউ। এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, সেই একই দৃশ্য মনে রাখার চেয়ে ভুলে যাওয়ার ক্ষেত্রে বেশি কাজ করছে মস্তিষ্ক।

পরীক্ষার সময় বিশজন প্রাপ্তবয়স্ককে কয়েকটি চেহারার ছবি, দৃশ্য ও বস্তু দেখতে দিয়ে মনে রাখতে বলেছিলেন বিজ্ঞানীরা। আর সে সময় তাদের মস্তিষ্কের কার্যক্রম একটি ফাংশনাল ম্যাগনেটিক রেজোনেন্স ইমেজিং (এফএমআরআই) স্ক্যানার দিয়ে রেকর্ড করা হয়। তারপর দেখানো দৃশ্য ও বস্তুগুলো ভুলে যেতে বলা হয়। এক্ষেত্রেও তাদের মস্তিষ্কের প্রতিক্রিয়া রেকর্ড করা হয়।

এরপর প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা দেখলেন, কানের ওপরে মস্তিষ্কের ভেন্ট্রাল টেম্পোরাল কর্টেক্স অংশ মনে রাখার চেয়ে ভুলে যেতে বলার পর বেশি কাজ করছে।

কোনো চেষ্টা ছাড়াই কোনো ঘটনা বা বিষয় ভুলে যাওয়াটা যে কত সহজ, তা সবাই জানেন। কিন্তু এই গবেষনা প্রমাণ করেছে, ইচ্ছে করে কেউ যদি কোনো কিছু ভুলে যেতে চান, তা কতটা কঠিন হতে পারে। এক্ষেত্রে বিষয়টাকে মুছে ফেলতে মস্তিষ্ককে বিশেষ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়, যা ধীর ও সময়সাপেক্ষ।

এ পরীক্ষায় আরো একটি বিষয় সামনে এসেছে। আর তা হলো, কোনো কিছু মনে রাখতে হলে তা ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

ঢাকা জার্নাল, এপ্রিল ০৫, ২০১৬

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.