৮৪’তে সন্‌জীদা খাতুন

এপ্রিল ৪, ২০১৬

Sanzidaঢাকা জার্নাল: ড. সন্‌জীদা খাতুন। নামের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে যার অনেক বিশেষণ। একাধারে রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী, লেখক, গবেষক, সংগঠক, সঙ্গীতজ্ঞ এবং শিক্ষক।

শীর্ষস্থানীয় সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং বর্তমান সভাপতি। সেই সঙ্গে তিনি জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদেরও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং প্রচলিত ধারার বাইরের ভিন্নধর্মী শিশুশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘নালন্দা’র সভাপতি।

সোমবার (০৪ এপ্রিল) বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম গুণী এই ব্যক্তিত্বের ৮৪তম জন্মদিন। ষাটের দশক থেকে বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশ ও সাংস্কৃতিক জাগরণের অন্যতম এ পুরোধার বয়স এবার ৮৩ বছর পূর্ণ হলো।

সন্‌জীদা খাতুন ১৯৩৩ সালের ০৪ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন। মা সাজেদা খাতুন ও বাবা জাতীয় অধ্যাপক কাজী মোতাহার হোসেনের সন্তান তিনি। দেশের প্রখ্যাত রবীন্দ্র সঙ্গীত বিশেষজ্ঞ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ওয়াহিদুল হকের স্ত্রী সন্‌জীদা খাতুন ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে সম্মানসহ স্নাতক শেষ করেন। ১৯৫৫ সালে ভারতের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ও শান্তিনিকেতন থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৮ সালে অর্জন করেন পিএইচডি ডিগ্রি। তিনি কর্মজীবন শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে শিক্ষকতার মাধ্যমে।

১৯৬২ সালে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শত বাধার মুখে রবীন্দ্র-শতবর্ষ উদযাপন, ছায়ানট প্রতিষ্ঠা, রমনার বটমূলে বর্ষবরণ- ইত্যাদির মধ্য দিয়ে বাঙালিত্বের দৃঢ় ভিত্তি গড়ে তুলবার সাধনায় ব্রতী সংস্কৃতিকর্মীদের মধ্যে সন্‌জীদা খাতুন অন্যতম। সারা জীবন ধরে তিনি শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি ও মননশীলতার চর্চা করে নিজেকে উন্নীত করেছেন এক ঈর্ষণীয় অবস্থানে। তিনি তৈরি করেছেন স্বকীয় এক পরিমণ্ডল, যা থেকে উত্তরকালের নবীনরা পেতে পারেন উদ্দীপনা আর অনুপ্রেরণা।

অসামান্য কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ সন্‌জীদা খাতুন রাষ্ট্রীয় পুরস্কার ‘একুশে পদক’, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের ‘রবীন্দ্রস্মৃতি পুরস্কার’, কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধি, বেগম জেবুননেছা ও কাজী মাহবুবউল্লাহ জনকল্যাণ ট্রাস্টের স্বর্ণপদক ও সম্মাননা, ‘সা’দত আলী আখন্দ পুরস্কার’,‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার’, ‘অনন্যা পুরস্কার’, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সম্মানজনক ফেলোশিপ, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘দেশিকোত্তম’ উপাধি, ‘বিজয় দিবস পদক’ ও বাংলা একাডেমির রবীন্দ্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

এ পর্যন্ত তার ২০টি প্রবন্ধ ও গবেষণাগ্রন্থ প্রকাশ পেয়েছে। এর মধ্যে ‘কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত’, ‘রবীন্দ্র সঙ্গীতের ভাবসম্পদ’, ‘ধ্বনি থেকে কবিতা’, ‘অতীত দিনের স্মৃতি’, ‘তোমারি ঝর্ণাতলার নির্জনে’, ‘রবীন্দ্রনাথ: বিবিধ সন্ধান’ উল্লেখযোগ্য।
ঢাকা জার্নাল, এপ্রিল ০৪, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.