অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পণ সংশোধন আইন চূড়ান্ত অনুমোদন
এপ্রিল ১, ২০১৩ ঢাকা জার্নাল: ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বৃদ্ধি, বিভাগীয় কমিটি গঠন ও মামলা নিষ্পত্তির সময়সীমা বৃদ্ধির সুযোগ রেখে ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পণ (সংশোধন) আইন, ২০০১’ চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার সচিবালয়ে মন্তিসভার বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা এ কথা জানান।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, সংসদের অধিবেশন চলমান না থাকায় সংশোধন আইনটি রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে অধ্যাদেশ আকারে জারি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে মন্ত্রিসভায়।
বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “আইনটির সংশোধন প্রস্তাবনা ছিল অধিকতর সংশোধনী। এখানে মূলত তিনটি সংশোধনী আছে।
আইনের আওতায় আমাদের দেশে যেগুলো অর্পিত সম্পত্তি আছে, তার তালিকা তৈরী করা। একটি ‘ক’ তালিকা আর একটি ‘খ’ তালিকা। ‘ক’ তালিকায় রয়েছে সরকারী দখলে, যা লিজে রয়েছে। আর ‘খ’ তালিকায় সরকারী দখলে নাই, যা লিজেও নাই।”
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এই আইন সংশোধন করা হয়েছিল আগেই। আইনটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। একারনৈ আইন মন্ত্রণালয় ও ভূমি মন্ত্রণালয় বসে খসড়া করেছে।
সংশোধন খসড়া বিষয় উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “‘ক’ তালিকার ক্ষেত্রে- কেউ যদি সম্পত্তি প্রত্যার্পন চান তাহলে ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে পারবেন। আর ‘খ’ তালিকা রয়েছে কমিটির মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা।”
ট্রাইব্যুনালের সংশোধনের বিষয় উল্লেখ করে সচিব বলেন, “আগের আইনে জেলা জজ ও সমমর্যদার কর্মকর্তরা বিচার কাজ পরিচালনা করবেন। আর আপিল নিষ্পত্তি করবেন হাইকোর্টের বিচারকরা।”
সচিব বলেন, “মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষে সংশোধিত আইনে ট্রাইব্যুনালের মামলা পরিচালনা করবেন সিনিয়র সহকারী জজ, যুগ্ম জেলা জজ এবং অতিরিক্ত জেলা জজ। আর আপিল নিষ্পত্তি করবেন জেলা ও দায়রা জেলা জজ সম মর্যদার কর্মকর্তা।”
এতে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে উল্লেখ করে সচিব বলেন, “ট্রাইব্যুনাল বেশি হওয়ার কারণে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির সুযোগ সৃষ্টি হল।”
মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে এ আইনে সাতটি বিভাগীয় কমিটি করা হয়েছে। এই সাতটি কমিটির প্রধান থাকবেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার। আর জেলা কমিটিতে থাকবেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)। কেন্দ্রীয় কমিটিতে প্রধান থাকবেন ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান।
বিদ্যমান আইনে জেলা কমিটির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করতে হতো কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে। সংশোধিত আইনে জেলা পর্যায়ের কমিটির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে বিভাগীয় কমিটির কাছে। এরপর বিভাগীয় কমিটির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে।
মামলা নিষ্পত্তিতে সময় বৃদ্ধির উল্লেখ করে সচিব বলেন, বিদ্যমান আইনে ট্রাইবুনাল ও কমিটি মামলা নিষ্পত্তি করবে ৩০০ দিনের মধ্যে।
আর সংশোধিত আইনে বলা হয়েছে ট্রাইবুনাল ও কমিটি মামলা এবং আপিল নিষ্পত্তি করবে ৩০০ দিনের মধ্যে। এ সময়ে যদি নিষ্পত্তি না হয় তাহলে উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে আরো ৬০ দিন সময় নিতে পারবেন। এরপরেও যদি মামলা নিষ্পত্তি না হয়, উল্লেখযোগ্য কারণ দেখিয়ে আরো ৩০ দিন সময় নিতে পারবেন।
সচিব বলেন, এর পরেও যদি মামলা ও আপিল নিষ্পত্তিতে সময় প্রয়োজন হয়, তাহলে সরকারের পূর্বানুমতি নিয়ে সময় বাড়াতে পারবেন। অপরদিকে সরকার অনধিক ৩০০ দিনের সময় বাড়তে পারবে।
ঢাকা জার্নাল, ১ এপ্রিল, ২০১৩