দুই মন্ত্রীকে সুপ্রিম কোর্টের তলব, আদালত অবমাননার নোটিশ

মার্চ ৮, ২০১৬

kamrulsmঢাকা জার্নাল: প্রধান বিচারপতি এবং বিচারাধীন বিষয় বিরুপ মন্তব্য করায় খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে তলব করেছেন সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে নোটিশ জারি করেছেন সর্বোচ্চ আদালত।

সরকারের দুই মন্ত্রীকে আগামী ১৫ মার্চ সকাল নয়টায় সর্বোচ্চ আদালতে হাজির হয়ে তাদের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে হবে।

মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীর চূড়ান্ত রায়কে কেন্দ্র করে বিরূপ মন্তব্য করেন দুই মন্ত্রী।

মঙ্গলবার (০৮ মার্চ) প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে নয় সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ মন্ত্রীদের তলব ও নোটিশ জারি করেন।

নোটিশে কেন তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না- তা দুই মন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছেন আপিল বিভাগ।

পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, ‘গণমাধ্যমে তাদের যে সমস্ত বক্তব্য প্রচার ও প্রকাশ করা হয়েছে তা অশোভন ও অবমাননাকর। এ বক্তব্যগুলোতে সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতিরা স্তম্ভিত। এটি বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ হয়েছে বলে মনে করি’।

গত শনিবার (৫ মার্চ) একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আলোচনা সভায় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে বাদ দিয়ে মীর কাসেমের মামলার আপিল শুনানি পুনরায় করার দাবি জানান খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইমলাম।

তিনি বলেন, ‘এ মামলার রায় কী হবে তা প্রধান বিচারপতির প্রকাশ্যে আদালতে বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আমি অনুধাবন করতে পেরেছি। তার বক্তব্যের মধ্যে এটা অনুধাবন করেছি যে, এ মামলায় আর মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই’।

তিনি আরো বলেন, ‘এরপরও যদি মামলার রায়ে মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে, তাহলে সবাই ভাববে, সরকার চাপ দিয়ে এ কাজ করিয়েছে। তাই আমি দাবি জানাচ্ছি যে, প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে মীর কাসেমের মামলার আপিল শুনানি পুনরায় করা হোক’।

কামরুল বলেন, ‘বাংলাদেশে ৪৫ বছরে অনেক বিচারপতি এসেছেন ও গেছেন, কিন্তু কেউ তার মতো এত অতিবক্তব্য দেননি। তার অতিকথনে সুধী সমাজের মানুষরা জিহ্বায় কামড় দিচ্ছেন। তাই তাকে অতিকথন থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি। আর তা না হলে সরকারকে নতুন করে বিকল্প চিন্তা-ভাবনা করা উচিত বলে আমি মনে করছি’।

সভায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বলছি, এ রায় নিয়ে যে শঙ্কা এখন একটি সংকটে পরিণত হয়েছে। তবে এই সংকট আমাদের সৃষ্ট নয়। সংকট সৃষ্টি করেছেন আমাদের মাননীয় প্রধান বিচারপতি। এটাই আমাদের দুঃখ।’ রায়ের আগে প্রধান বিচারপতি যদি এমন কথা বলেন তাহলে জাতি কোথায় যাবে বলে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

এদিকে মঙ্গলবার সকালে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে ৫ সদস্যের আপিল বেঞ্চ একাত্তরে আলবদর বাহিনীর তৃতীয় শীর্ষনেতা মীর কাসেম আলীর আপিল মামলার চূড়ান্ত রায় দেবেন। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান।

ঢাকা জার্নাল, জানুয়ারি ০৬, ২০১৬

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.