‘২০ বছর পরে দেশে কোনো হিন্দু থাকবে না’

মার্চ ২৯, ২০১৩

1308132014_DSC_4163ঢাকা জার্নাল: মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, “বাঁশখালী ও গাইবান্ধায় সংখ্যালঘুদের হামলার চিত্র দেখতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে বুঝতে পারছি তারা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।কোথায় আমরা আছি, আমরা কি আদৌ কোন সভ্যতার মাঝে আছি ? কাঙ্গালের কথা বাঁশি হলেও ফলে। আগামী ২০ বছরের পরে দেশে কোনো হিন্দু থাকবে না ”

শুক্রবার সকালে সম্প্রীতি মঞ্চের আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) ক্যাফেটেরিয়ায় ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন প্রতিরোধে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “ এদের রক্ষার জন্য আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। তা না হলে তারা চিরতরে হারিয়ে যাবে। আমার কাছে যে তথ্য আছে তা থেকে বলছি, ভবিষ্যতে আরো বড় ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটবে। এর জন্য আমরা কতটা প্রস্তুত আছি। আমাদের কথার সময় নয়, এখন কাজের সময়। রাষ্ট্রকে ধ্বংস করার জন্য একটি চক্র কাজ করছে। তাদের রুখতে হবে। এটি করার জন্য যেটি দরকার, যেখানে যেখানে সংখ্যালঘু রয়েছে সেখানেই নাগরিক কমিটি গঠন্ করতে হবে।”

বিরোধী দল বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনাদের কর্মীদের নির্দেশ দিন তারা যেন সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ান, দিনের পর দিন পাহারা ও নিরাপত্তা দেন। তখন বোঝা যাবে জনগণ কাদের পক্ষে আছে। রামুর ঘটনার পর সরকার যে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে, তেমনি এই সংখ্যালঘুদেরও ক্ষতিপূরণ অতিদ্রুত দিতে হবে। তা না হলে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবেন। এজন্য রাষ্ট্রকেই এগিয়ে আসতে হবে।”

গণমাধ্যমকে আরো দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ড. মিজান বলেন, “আমাদের সংবাদ মাধ্যমকে অধিক দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। সংবাদ বিপণন করা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সাদাকে সাদা ও কালোকে কালো বলতে হবে। গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে কাজ করতে হবে। সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়াতে হবে।”

মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, “কোনো দেশে সমস্যার দুটি দিক রয়েছে তা হলো রাজনৈতিক ও সামাজিক। যখন আমরা রাজনৈতিক সমস্যার কথা বলি তখন নিরপেক্ষতার কথা বলি। সেই নিরপেক্ষতা থেকে এখন বেরিয়ে আসতে হবে। অনেক হয়েছে আমাদের নিরপেক্ষতা।”

তিনি বলেন, “যখনই নিরপেক্ষতার কথা বলি যারা যুদ্ধপরাধীদের বিচার চায় ও চায় না তাদের একই পাল্লায় মাপা শুরু করি।এটা এখনই বন্ধ করতে হবে। আর কতদিন এই খেলা খেলবো। আওয়ামী লীগের কথা বলতে গেলে বিএনপির কথা আনতেই হবে। একদল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে এবং আরেক দল বলে, তোরা যে যা বলিস ভাই জামায়াত আমার চাই।”

ড. মিজান বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ গড়তে আমাদের নিজ দায়িত্বে কাজ করতে হবে। অনেকদিন বামপন্থিরা এই কাজ করছেন।এখন তাদের কেন আমরা পাচ্ছি না।উদীচী শুধু গান শোনার জন্য নয়। সাধারণ মানুষ রাষ্ট্রদ্রোহিতার কথা বললে তাদের শাস্তি দেয়া হয়। তবে অন্য কেউ এ কথা বললে তাদের কিছুই হয় না।এই আইনহীনতার সংস্কৃতি ত্যাগ করতে হবে।”

মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, “হরতালের শেষে তিনি বলেন, আমাদের হরতাল স্বতস্ফূর্ত হয়েছে। তিনি যেদিন এটাকে ‘দুঃখজনক’ বলবেন, সেদিনই তা সফল হবে।

হরতাল চলাকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নিন্দা জানান মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.