শনাক্ত ‘মহাকর্ষীয় তরঙ্গ’, ঠিক বলেছিলেন আইনস্টাইন

ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৬

Graviational_theory_862790494ঢাকা জার্নাল: শত বছর আগে বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন তার সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্বে স্থান-কাল বাঁকিয়ে দেওয়া যে তরঙ্গের কথা বলেছিলেন, সে ‘মহাকর্ষীয় তরঙ্গ’ শনাক্ত করার দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। এই তরঙ্গের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ায় মহাবিশ্ব সৃষ্টির ক্ষেত্রে জনপ্রিয় ‘মহাবিস্ফোরণ’ বা বিগ ব্যাং তত্ত্ব আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হলো।

বিজ্ঞানীদের দাবি, পৃথিবী থেকে শত কোটি আলোকবর্ষ দূরে সূর্যের চেয়ে প্রায় ৩০ গুণ ভারী দু’টি কৃষ্ণ গহ্বরের (ব্ল্যাক হোল) সংঘর্ষ থেকে সৃষ্টি এই মহাকর্ষীয় তরঙ্গ (গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েব) শনাক্ত করা হয়েছে।

গবেষণার পর বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। গবেষণা পরিচালনা করেন লেজার ইন্টারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েব ওভজারভেটরির (লিগো) বিজ্ঞানীরা। তাদের সঙ্গে ছিলেন ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি ও ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষকরা।

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন লিগোর নির্বাহী পরিচালক ডেভিড রেইতজে। তিনি বলেন, আমরা মহাকর্ষীয় মৃদু তরঙ্গ শনাক্ত করেছি। এই আবিষ্কার জ্যাতির্বিজ্ঞানে নতুন যুগের সূচনা করলো। মূলত এই আবিষ্কারের ফলে বহু দশকের অনুসন্ধান-প্রতীক্ষার অবসান ঘটলো। এর মাধ্যমে বিগ ব্যাং তত্ত্বের নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো।

সংবাদ সম্মেলনে বিজ্ঞানীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পৃথিবী থেকে একশ’ ৩০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে কৃষ্ণ গহ্বর দু’টি পরস্পর কেন্দ্র করে চক্রাকারে ঘুরতে ঘুরতে এক পর্যায়ে মিশে যায়। এর ফলে সৃষ্টি হয় ওই মৃদু তরঙ্গ।

বিজ্ঞানীরা জানান, গবেষণায় তারা চার কিলোমিটার দীর্ঘ এমন একটি টানেল তৈরি করেন যাতে লেজার রশ্মি চলাচল করতে পারে। লিগা নামে পরিচিত এ প্রক্রিয়া একটি পরমাণুর ব্যাসের ১০ হাজার ভাগের এক ভাগ পর্যন্ত সূক্ষ্ম দৈর্ঘ্য পরিমাপ করতে পারে। তৈরি টানেলটিতে মহাকর্ষীয় তরঙ্গের প্রভাবে এই লেজার রশ্মির অতি সামান্যতম বিচ্যুতিও পরিমাপের ব্যবস্থা করা হয়।

বিজ্ঞানীদের এই অর্জনকে ইতিহাসের মাইলফলক বলে অভিহিত করেছেন কৃষ্ণ গহ্বর ও মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে গবেষণা চালিয়ে আসা বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং। তিনি বলেছেন, ‘এ তরঙ্গ মহাবিশ্বকে দেখার ক্ষেত্রে পুরোপুরি নতুন পথ দেখাবে।’

ঢাকা জার্নাল,  ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৬

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.