আইএস ও জঙ্গিবাদ ইহুদি-নাসারাদের সৃষ্টি

ডিসেম্বর ২৪, ২০১৫

11ঢাকা : খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, ‘যারা ইসলামের ক্ষতি চায়, মুসলমানদের ক্ষতি চায় তারাই আইএস সৃষ্টি করেছে। যারা ইসলামী দেশগুলো একেরপর এক ধ্বংস করছে, নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছে, সেই সব ইহুদি-নাসারাই আইএস, তালেবান ও অন্য জঙ্গি দলগুলো সৃষ্টি করেছে।’ বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে আয়োজিত ‘পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ১৪৩৭ হিজরি উদ্‌যাপন উপলক্ষে পক্ষকালব্যাপী অনুষ্ঠান মালার শুভ উদ্বোধন’ অনুষ্ঠানে প্রধানবক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেন।

কামরুল ইসলাম বলেন, ‘ইহুদি-নাসারা ইরাক ধ্বংস করেছে, আফগানিস্তান ধ্বংস করেছে, সিরিয়া ধ্বংস করছে। আজ বাংলাদেশ যখন অর্থনৈতিক দিক থেকে সমৃদ্ধ হতে যাচ্ছে, তখন তারাই আইএসের নাম করে বাংলাদেশকেও ধ্বংস করার জন্য এ দেশে ঢোকার পরিকল্পনা করছে। তারা বাংলাদেশে জঙ্গি আছে বলে অপ্রপ্রচার চালাচ্ছে। আজ সারা বিশ্বে মুসলমানদের নাম শুনলেই সাধারণ মানুষ ঘৃণা ভরে তাকায়। তাদের কারণেই মুসলমানদের সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ইসলামে কোনো জঙ্গিবাদ নেই। কোনো মুসলমান প্রতিহিংসামূলকভাবে সাধারণ মানুষকে হত্যা করতে পারে না। তাছাড়া, দেশপ্রেম হচ্ছে ঈমানের অঙ্গ। তাই কেউ কোনো দিন সাচ্ছা মুসলমান হতে পারবে না, যতক্ষণ না তার মধ্যে দেশ প্রেম থাকবে।’

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাসূল (সা.) শুধু ধর্ম প্রচারকই ছিলেন না, তিনি একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন।  তিনি সেনানায়ক, ‍যুদ্ধ কৌশলী হিসেবে সবার ঊর্ধ্বে ছিলেন। তার মতো সফলতায় আজ পর্যন্ত কেউ পৌঁছাতে পারেনি। তিনি হিংসাবশবর্তী হয়ে কারো ওপর প্রতিশোধ নেননি কিংবা হত্যা করেননি। তার ওপর যে পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছে, তা যদি সারাবিশ্ব মেনে চলতো, তার মর্ম বাণী উপলব্ধি করতো তাহলে মুসলমানদের আজ এ অবস্থা হতো না। এ কোরআন দ্বারাই মুসলমানরা বিশ্ব চালাতে পারতো।’

এগুলো আমার কথা না, এগুলো দার্শনিক বার্টান্ড রাসেল অনেক আগেই বলে গেছেন বলেও জানান তিনি।

প্রধান অতিথির লিখিত বক্তব্যে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান বলেন, ‘রাসূল (সা.) আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। তিনি এ ধরায় আসার মাধ্যমেই সব সত্য-মিথ্যার পার্থক্য নির্ণয় হয়েছে। তিনি সর্বকালের সর্ব শ্রেষ্ঠ মহামানব হিসেবে প্রতিফলিত হয়েছেন। আমরা যদি তার অনুপম গুণাবলী অনুসরণ ও পালন করি, তাহলে আমাদের কোনো সমস্যাই হতো না। তাহলে আমরা সারা বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারতাম।’

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক শামীম মোহাম্মদ আফজাল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এ ইসলামিক ফাউন্ডেশন নির্মাণ করেছিলেন। তিনি এর পাশাপাশি দেশে ইসলামকে সুদৃঢ় করার জন্য তাবলিগসহ অন্য চারটি ধর্মীয় দল নিয়ে কাজ করে গেছেন। ঢাকার অদূরে বিশ্ব ইজতেমার ব্যবস্থাও তিনি করে গেছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘ইসলামী পড়াশোনার কারিকুলাম আমাদের দেশের ইসলাম নামধারী কিছু আলেম পরিবর্তন করেছিল। যেগুলো এখন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সংশোধন করা হচ্ছে। তারা ইসলামের প্রকৃত এলেম থেকে দূরে নিয়ে যাওয়ার অপ্রচেষ্টা করেছিল। যারা শেষ পর্যায়ে এসে ধরা পড়েছে। আর আমাদের দেশের একটি রাজনৈতিক দল জঙ্গিদের পৃষ্টপষোকতা করছে।’

এসময় তিনি ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ঢাকা জেলার ৩৫টি শাখায় মসজিদগুলোতে সরকারিভাবে ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠান করার ব্যবস্থা গ্রহণের করার নির্দেশ দেন। এসব ওয়াজ মাহফিলে যেসব ইমাম ভালো ওয়াজ ও নসিহত করতে পারবেন তাদের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত করা হবে বলেও জানান তিনি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নর আল্লামা শায়খ খন্দকার গোলাম মাওলা নকশবন্দী, মিছবাউর রহমান চৌধুরী ও বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিব প্রমুখ।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.