১১ উপায়ে অনিশ্চয়তা দূর করেন সফল মানুষরা

ডিসেম্বর ২৩, ২০১৫

আধুনিক জীবনকে জটিল করতে হার্ডওয়্যারের কাজ করে  মানুষের মস্তিষ্ক। যেকোনো অনিশ্চয়তার সামনে যখন মানুষ পড়ে, তখনই সব এলোমেলো হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। তবে মস্তিষ্ককে যদি বেশ কিছু কৌশল ব্যবহার করতে পারেন, তাহলেই অনিশ্চয়তা থেকে নিমিষেই বেরিয়ে আসা সম্ভব। অনিশ্চয়তা দেখা দিলেই মস্তিষ্ক উত্তেজিত হতে চায়। কিন্তু সফল মানুষরা এই উত্তেজনাকে প্রশমিত করার কৌশল চর্চা করেন। চিন্তাকে বাস্তবিক পরিস্থিতিতে ধাবিত করে তারা এতে মিশেল ঘটান আবেগপ্রসূত বুদ্ধিমত্তাকে। এ ধরনের মানুষের মস্তিষ্ক নিয়ে গবেষণা করেছে ট্যালেন্টস্মার্ট নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান। এরা সবাই যার যার ক্ষেত্রে সফল মানুষ। নিশ্চিয়তা খুঁজে বের করতে ইকিউ বা ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্সকে উন্নত করতে হবে। আর তার জন্যে ফোর্বস তুলে ধরেছে বিশেষজ্ঞের ১১টি পরামর্শ

। ১. লিম্বিক সিস্টেম থেকে বেরিয়ে আসেন তারা। এটা এমন এক বিষয় যখন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়লে মানুষের হাঁটু কাঁপার মতো সমস্যার সৃষ্টি হয়। ভালো সিদ্ধান্ত নিতে ভয় আসে মনে। যারা সকল বিপত্তির মধ্যেও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, তারা এই লিম্বিক সিস্টেম থেকে বেরিয়ে আসেন।

২. সব বিষয়ে ইতিবাচক থাকাটা তাদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ভয় এবং বিরক্তি তাদের মস্তিষ্কের মনোযোগ কাড়তে পারে না। তাই এক অর্থ তারা সব সময় স্ট্রেস ফ্রি থাকেন। ইতিবাচক চিন্তায় মস্তিষ্ক বেশ সহজ ও স্বাবলীল হয়ে ওঠে। যখন সব ঠিকঠাক যাচ্ছে এবং মেজাজ ভালো আছে, তখন বাজে পরিস্থিতি মোকাবেলা অপেক্ষকৃত সহজ হয়ে উঠেছে। ইতিবাচক থাকতে দিনের সফল কাজের তালিকা করুন। এ নিয়ে চিন্তা করতে থাকুন।

৩. সফল মানুষরা জানেন তারা আসলে কি জানেন। আবার তারা কি কি জানেন না তাও জানেন। কোনো কাজ করতে গেলে এর সম্পর্কে আপনি কি কি জানেন না, তা স্পষ্ট হতে হবে নিজের কাছে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে রাখেন তারা। তাই হঠাৎ করে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েন না আত্মবিশ্বাসীরা।

৪. যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে তা গ্রহণ করে নেন তারা। অনেক কিছুই নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকবে। আর তা মেনে নিতে হবে। যারা মেনে নিতে পারেন না তারাই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যান। সফল মানুষরা বাস্তব দুনিয়ায় বাস করেন। তারা বোঝেন যে সব কাজ সবাইকে দিয়ে হয় না। এবং তাদের অধীনে অনেক কিছুই নেই।

৫. যা জরুরি তার দিকেই দৃষ্টি থাকে তাদের। এ কারণে  অযাচিত বিষয়ে মন দিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন না তারা। তাই অনিশ্চয়তাপূর্ণ পরিস্থিতি তাদের সময় নষ্ট করে না। যা প্রয়োজন তা নিয়েই ব্যস্ত থাকেন তারা।

৬. নিখুঁতভাবে কোনো কাজ সম্পন্ন হয় না। এ নিয়ে সময় নষ্টের সময়ও নেই তাদের। বিশেষ করে অনিশ্চিত কোনো পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব বলে আশাও করেন না তারা। তাই প্রতিটি কাজে কিছু সমস্যা থাকবেই এবং তা মেনে নিতে পারেন এ ধরনের মানুষরা।

৭. সমস্যা নিয়ে সব সময় পড়ে থাকতে দেখা যায় না সফলদের। সমস্যা থাকবেই। কাজেই একে সঙ্গী করেই এগিয়ে যেতে হবে। সমস্যা এমনিতেই স্ট্রেস আনে। এতে কর্মদক্ষতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই সমস্যাকে স্বাভাবিকভাবেই নিতে হবে। একে নিয়ে অন্যান্য কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে হবে।

৮. সফল মানুষরা তাদের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের প্রতি ভরসা রাখেন। অনিচ্ছাকৃত ভুল সিদ্ধান্ত তাদের মনে সংশয় হয়ে দেখা দেয়। তাই নিশ্চিত লাভবান হতে তারা প্রায়ই ইন্সটিক্ট-এর ওপর নির্ভর করেন। এর চর্চা প্রয়োজন। অনিশ্চয়তা থেকে অনেক সময় মুক্ত করবে এই অভ্যাস।

৯. অনিশ্চয়তার মধ্যে থেকেও সেরা ফলাফল পাওয়ার আশা করা যায়। তাই অনেক সময় এ ধরনের পরিস্থিতিও নৈরাশ্যের জন্ম দেয় না। ভুলক্রমেও অনিশ্চয়তা আসতে পারে। তাই এর মাঝেও সম্ভাবনা খুঁজতে হবে।

১০. সবকিছু ঠিকঠাক থাকার পরও সংশয়বাদীরা ‘যদি এমন হয়’ প্রশ্নটি করতে চান। এতে পুরোটাই এলোমেলো হয়ে যেতে পারে। তাই বাস্তবিক যুক্তিতে পরিস্থিতি ঠিক থাকলে আর কোনো দুশ্চিন্তা করতে নারাজ তারা। এই প্রশ্ন গোটা পরিস্থিতি এমন জায়গায় নিয়ে যাবে যা তারা মোটেও আশা করেন না।

১১. সব ব্যর্থ হলেও তারা শান্তির শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করেন। অনিশ্চয়তার মধ্যে ব্যর্থতা আসতেই পারে। বাড়তি দুশ্চিন্তা এবং মানসিক চাপ সামলাতে তাই শ্বাসের মাধ্যমে স্থিত হওয়ার চেষ্টা করুন। একা হয়ে যান এবং ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করুন। এতে পেরেশানি কমে আসবে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.