ধর্ষণ মামলার আসামি সাত বছরের শিশু

ডিসেম্বর ২৩, ২০১৫

বাবার কোলে চড়ে আদালতে এসেছে সাত বছরের এক শিশু । কারণ তাকে একটি ধর্ষণ মামলার আসামী করা হয়েছে। গতকাল সোমবার ঝিনাইদহের অবকাশকালীন দায়রা জজ এজলাসে সে হাজিরা দিতে আসে। তার অপরাধ সে ধর্ষণের ঘটনা দেখে ফেলেছে। এ অপরাধেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে সহযোগি আসামি দেখিয়ে আদলতে চার্জশিট দাখিল করেছেন। ওই শিশুর বাড়ি কালীগঞ্জ উপজেলার মোস্তবাপুর গ্রামে। তবে শিশুটি যাতে হয়রানীর শিকার না হয় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে রাষ্টপক্ষের আইনজীবিকে মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক। মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল বিকেলে মোস্তবাপুর গ্রামের ২য় শ্রেণীতে পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হন।

এসময় শিশুটি ঘটনা দেখে ফেলে চিত্কার করে। এরপররই ধর্ষক আবু ইউসুফ (১৪) পালিয়ে যায়। পরে ওই স্কুলছাত্রীর বাবা কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার এজাহারে ইউসুফকে আসামী করা হয়। কিন্তু ওই ছাত্রীর জবানবন্দি অনুসারে মামলার চার্জশীটে ওই শিশুকে  সহযোগি হিসাবে আসামী করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকতা। এ ব্যাপারে ওই শিশুর পিতা জানান, সেদিন তাঁর ছেলে সেখানে খেলা করছিল। ঘটনাটি দেখেছিল তাই শিশুটিকে সহযোগি হিসাবে আসামী হয়েছে।

সে কোন অপরাধ করেনি। যোগাযোগ করা হলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কালীগঞ্জ থানার সাবেক ওসি তদন্ত ও বর্তমান চুয়াডাঙ্গা  গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ইউনুস আলী  বলেন, ‘এজাহারে আসামী নাম উল্লেখ করা হলেও ধর্ষিতার জবানবন্দি অনুসারে চার্জশীটে শিশুটিকে আসামী করা হয়েছে সহযোগি হিসাবে ।’ জানতে চাইলে ঝিনাইদহ জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিউকিউটর ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘নথি না দেখে সঠিকভাবে বিষয়টি বলতে পারছি না। এটুকু বলতে পারি শিশুটিকে মামলায় স্বাক্ষী হওয়ার কথা ছিল। হইতো ভুলবশত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চার্জশীটে তাকে আসামী করেছেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘শিশুটি যেন হয়রানীর শিকার না হয় সে জন্য বিজ্ঞ বিচারক আমাকে মৌখিক ভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আমি সে মোতাবেক কালীগঞ্জ থানার ওসিকে বিষয়টি জানিয়েছি।’

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.