হঠাৎ হাঁপানির বাড়াবাড়ি

ডিসেম্বর ৭, ২০১৫

27মেডিসিন বিভাগ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ
হাঁপানি রোগীদের জন্য শীতকালটা বেশ কঠিন সময়। কখন বাড়াবড়ি রকমের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়, সে জন্য তাঁদের সতর্ক থাকতে হয়। হিমেল শুষ্ক বাতাস, ধুলাবালি, উড়ন্ত রেণু, পাতার গুঁড়ো ইত্যাদির সংস্পর্শে হাঁপানি রোগীর অতি সংবেদনশীল শ্বাসতন্ত্র বেশি আক্রান্ত হয়। ফলে হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে শ্বাসকষ্ট, কাশি ও বুকের আওয়াজ। জেনে নিন, এ রকম পরিস্থিতিতে কী করতে হবে:
— শ্বাসকষ্ট যদি এতটাই বেড়ে যায় যে ঠিকমতো কথাও বলতে পারেন না, বুকের ভেতর বাঁশির মতো শব্দ হয় অথবা কাশির দমক বেড়ে যায়—বুঝবেন আপনার হাঁপানি মারাত্মক হয়ে উঠেছে। সঙ্গে জ্বর ও কাশি থাকলে ধরে নেওয়া যায়, জীবাণু সংক্রমণও হয়েছে। আর হাঁপানি রোগীদের ভাইরাস সংক্রমণও হঠাৎ জটিল রূপ নিতে পারে। তাই উপসর্গের এই পরিবর্তনগুলোকে ঠিকমতো গুরুত্ব দিন।
— হঠাৎ উপসর্গ বেড়ে গেলে প্রথমেই আপনার নিয়মিত ব্যবহার্য ইনহেলার প্রতি ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর পর কয়েকবার নিতে থাকুন।
— শ্বাসতন্ত্র বেশি সংকুচিত হয়ে গেলে ইনহেলার ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না। সে ক্ষেত্রে নেবুলাইজার যন্ত্রের সাহায্য নিতে পারেন। বাড়িতে নেবুলাইজার থাকলে ভালো, নয়তো কাছের যেকোনো সেবাকেন্দ্রে গিয়ে তা নিতে পারেন। বাড়িতে ব্যবহার করলে ভালো করে হাত ধুয়ে চিকিৎসকের নির্দেশমতো ওষুধ ও স্যালাইন মিশিয়ে ব্যবহার করুন।
— হাঁপানি রোগীদের পিক ফ্লো মিটার নামক যন্ত্র বাড়িতে রাখা উচিত। শ্বাসকষ্ট বাড়লে এই মিটার ব্যবহার করে তীব্রতা বোঝা যায়। সেখানে আপনার স্বাভাবিক শ্বাস গ্রহণ ক্ষমতার ৫০ থেকে ৭৯ শতাংশে নেমে এলে বুঝতে হবে সমস্যা বেড়ে গেছে।
— শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে স্বল্পমেয়াদি স্টেরয়েড ওষুধের একটি কোর্স খাওয়া যায়। তবে সে জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আগেই এ বিষয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নিতে পারেন।
— বাড়িতে ইনহেলার বা নেবুলাইজার ব্যবহার করেও কোনো সুফল না পেলে অবশ্যই হাসপাতালে যেতে হবে। কেননা হঠাৎ হাঁপানি বেড়ে গেলে তা থেকে মারাত্মক জটিলতা, এমনকি রেসপিরেটরি ফেইলিউর হতে পারে। হয়তো অক্সিজেন ও শিরায় ওষুধের প্রয়োজন হতে পারে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.