পাকিস্তানি কন্স্যুলেট ভবনের অর্ধেক বাংলাদেশের প্রাপ্য

ডিসেম্বর ৫, ২০১৫

03নিউইয়র্ক : কূটনৈতিক শিষ্টাচার লংঘন করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ও একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারে পাকিস্তানের অযাচিত হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে নিউইয়র্কস্থ পাকিস্তানি কন্স্যুলেট ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশি আমেরিকান। আগামী ৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে এই কর্মসূচি পালন করা হবে। এদিকে নিউইয়র্কের পাকিস্তানি কনস্যুলেটের অর্ধেক বাংলাদেশের প্রাপ্য দাবি করা হয়েছে।

সিটির জ্যাকসন হাইটস্থ একটি পার্টি সেন্টারে গত ২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশি আমেরিকান-এর নেতারা পাকিস্তানি কনস্যুলেট ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ঘোষণার কথা জানানোর পাশাপাশি এই কনস্যুলেটের অর্ধেক বাংলাদেশের প্রাপ্য বলে দাবি করেন।

সম্মেলনে বলা হয়, একাত্তরের গণহত্যা অস্বীকার এবং যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে সাফাই গাওয়ার নিন্দা জানাতে ৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ২টায় ম্যানহাট্যানের ফিফথ এভিনিউ ও ইস্ট সিক্সটি ফিফথ স্ট্রিটের কর্নারে অবস্থিত পাকিস্তান কন্স্যুলেট ভবনের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশে করা হবে।

দলমত নির্বিশেষে সকল বাংলাদেশিকে এই সমাবেশে যোগ দিয়ে পাকিস্তানের প্রতি ঘৃণা প্রকাশের আহ্বান জানান সমাবেশের আয়োজক এলায়েন্স অব বাংলাদেশি আমেরিকানের নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ড. প্রদীপ রঞ্জন কর। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন প্রবীন সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ ও সাংবাদিক মুজাহিদ আনসারী। মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাসুদুর রহমান, হিরু ভূইয়া ও খোরশেদ আলম বাবলু সহ কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট মোর্শেদা জামান, গোপাল স্যানাল, স্বীকৃতি বড়ৃয়া প্রমুখ সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ।

লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয় যে, একাত্তরে এদেশে নারকীয় গণহত্যা চালানোর পরও পাকিস্তানের ভেতর সামান্যতম অনুতাপ পরিলক্ষিত হয়নি, বরং বিভিন্ন সময় তারা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে। গত ৩০ নভেম্বর ২০১৫ ইসলামাবাদে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনারকে তলব করে একাত্তরে সংঘটিত গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ নির্লজ্জভাবে অস্বীকার করল পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ড. কর বলেন, পাকিস্তানের এ ধৃষ্টতা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের বিরুদ্ধে। পাকিস্তানকে এই ধৃষ্টতার কড়া জবাব দেয়া না হলে তা হবে ত্রিশ শহীদের রক্তের প্রতি অপমান।

পাকিস্তানের ধৃষ্টতার প্রতিবাদে বাংলাদেশ রাষ্ট্র বা সরকারের কাছে কয়েকটি দাবি :

১) পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত করা।
২)  সার্ক থেকে পাকিস্তানকে বহিষ্কার করা।
৩) একাত্তর সালের গণহত্যার দায় স্বীকার করতে পাকিস্তানকে বাধ্য করা।
৪) পাক হানাদার সেনাবাহিনীর ১৯৫ জন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীর বিচারের আওতায় আনা।
৫) পাকিস্তানের কাছে নায্য হিস্যার পাওনা অর্থ ফিরিয়ে আনা।
৬) একাত্তরে আটকে পড়া পাকিস্তানিদের দেশে ফেরত পাঠানো।

সাংবাদিক সম্মেলনে সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, ‘পাকিস্তান কনস্যুলেট ভবনের উপর বাংলাদেশের অধিকার রয়েছে। পাক-ভারত পৃথক হওয়ার পরপরই বৃটিশ কর্তৃপক্ষ ভবন দুটি (ভারতীয় কনস্যুলেট ভবন ও পাকিস্তানী কনস্যুলেট ভবন) ভারত ও পাকিস্তান সরকাকে বুঝিয়ে দেয়। পাকিস্তান কনস্যুলেট ভবনের সামনেই ভারতীয় কনসুলেট ভবন। পাকিস্তান কনস্যুলেট ভবনটির মূল্য ২৫০ মিলিয়ন ডলার। পাকিস্তানের সকল সম্পদে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যার অধিকার রয়েছে।’ এজন্য সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে তিনি প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান।

ড. প্রদীপ রঞ্জন কর বলেন, সমাবেশ শেষে পাকিস্তান কনস্যুলেট অফিসে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.