খালেদার মন্তব্য উস্কানিমূলক: আওয়ামী লীগ

মার্চ ২৫, ২০১৩

kkkkkkkঢাকা জার্নাল: বাংলাদেশে সেনাবাহিনীকে ঘিরে বিরোধীদলীয় নেতার একটি মন্তব্যকে উস্কানিমূলক বলে বর্ণনা করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, মিসেস জিয়া ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ‘ক্ষমতায় যাওয়ার টার্গেট’ থেকে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন।

তবে এসব অভিযোগ নাকচ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ।

তিনি তাদের দলের নেত্রীর মন্তব্যের ব্যাখ্যা তুলে ধরে বলেছেন, ঐ মন্তব্যকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করার সুযোগ নেই।

রোববার উত্তরাঞ্চলীয় দুটি জেলা বগুড়া এবং জয়পুরহাট সফরের সময় খালেদা জিয়া বলেন দেশে ‘বিশৃংখলা বা গণহত্যা’ চললে সেনাবাহিনী নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করবে না।

বিরোধীদলীয় নেতার মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন এক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে ক্ষমতাসীন মহাজোটের প্রধান শরীক দল আওয়ামী লীগ।

দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ অভিযোগ করেন, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার টার্গেট থেকে খালেদা জিয়া সেনাবাহিনীর প্রতি উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন।

তিনি বলছিলেন, ”সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য দায়িত্বে নিয়োজিত সামরিক বাহিনীকে হস্তক্ষেপ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। এটা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি বলে আমি মনে করি। বিরোধীদলীয়নেত্রী জনগণের প্রতি আস্থা হারিয়ে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার লক্ষ্য থেকে এ ধরণের বক্তব্য দিয়েছেন।”

সামালোচনা করা হয়েছে সাবেক সামরিক শাসক জেনারেল এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি থেকেও। জাতীয় পার্টি মহাজোটের শরীক।

দলটির মহাসচিব রুহুল আমীন হাওলাদার বলেন, সেনাবাহিনীকে রাজনীতির উর্ধ্বে রাখা উচিত বলে তারা মনে করেন।

অবশ্য খালেদা জিয়ার মন্তব্যের ব্যপারে তার দল বিএনপির পক্ষ থেকে আত্মপক্ষ সমর্থন করে ব্যাখ্যা তুলে ধরা হয়েছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়ার বক্তব্যে উস্কানিমূলক কিছু নেই বলে তারা মনে করেন।

তিনি বলেন, ”উনি বলেছেন যে, বগুড়ায় সমস্যার সময় যখন সেনাবাহিনীকে নিয়োগ করা হয়েছিল, কোন গুলি না করেই অত্যন্ত সাফল্যের সাথে সেনাবাহিনী সমস্যার সমাধান করেছিল। সে জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে বিরোধীদলীয় নেত্রী বলেছেন, সেনাবাহিনী সবসময়ই জাতির প্রয়োজনে বিশেষ করে প্রাকৃতিক দুর্যোগে বা প্রশাসনের সহায়তায় ভূমিকা পালন করেছে।”

একইসাথে  আলমগীর উল্লেখ করেন, ”বিদেশে যেহেতু সেনাবাহিনী ভাল ভূমিকা রাখছে এবং সুনাম রয়েছে। ফলে দেশের মধ্যে যদি অশান্তি থাকে, তাহলে সেনাবাহিনীর সেই সুনাম থাকবে না। এবং এ বিষয়ে বিরোধীদলীয় নেত্রী বলেছেন, এতে সবার ভাববার সময় এসেছে। এর মধ্যে উস্কানিমূলক কোন কথা আছে বলে আমার মনে হচ্ছে না।”

জামায়াতে ইসলামীর নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়ের পর বিরোধীদলের টানা তিনদিনের হরতালে যে জেলাগুলোতে সহিংসতা হয়েছিল, তার মধ্যে বগুড়ায় সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনা ঘটে।

রোববার সেখানেই সফরের সময় এক সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মন্তব্য করেন, সেনাবাহিনী নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করবে না। সেনাবাহিনী ‘সময়মত’ ভূমিকা পালন করবে, এমন কথাও তাঁর বক্তব্যে উঠে এসেছিল।

বগুড়ায় সহিংসতার প্রেক্ষাপটে সেখানে সেনাবাহিনী নামানো হয়েছিল। তাতে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল। সেই বিষয়কেই ঘিরেই খালেদা জিয়া এ সব মন্তব্য করেন।

এসব বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে বিএনপি নেতা আলমগীর বলেন, দু’একটি সংবাদমাধ্যম সবসময়ই বিএনপি চেয়ারপারসনের বক্তব্য বিকৃতভাবে তুলে ধরে ভিন্ন ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করে।

তবে পুরো বিষয়টাতে যে একটা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া হয়েছে, দলটির অনেক নেতাই সেটা মনে করেন।

সূত্র: বিবিসি

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.