‘বাংলাদেশসহ অনেক দেশই বড় ঝুঁকিতে পড়বে’

নভেম্বর ৭, ২০১৫

25চলতি মাসের ৩০ তারিখ থেকে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে যে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন (কপ ২১) শুরু হচ্ছে তাতে আইনগত বাধ্যবাধকতাসহ একটি চুক্তি হতে হবে। তা না হলে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অনেক বড় ঝুঁকিতে পড়বে।

আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের ক্ষতি নিয়ে আলোকচিত্রসহ একটি বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে বক্তারা এসব কথা বলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় কোস্ট ট্রাস্ট বাংলাদেশ ও ইক্যুইটি বিডি বইটির প্রকাশনা ও উৎসবের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, যদি শুধু চুক্তি হয় এবং তা মানতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো বাধ্য না থাকে, তাহলে ওই চুক্তি বিশ্ব জলবায়ু মোকাবিলায় কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না।

পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক বলেন, বাংলাদেশ এই জলবায়ু সম্মেলনের জন্য বেশ ভালো মতোই প্রস্তুতি নিয়েছে। জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক চুক্তিতে যেন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত ও অভিবাসিত মানুষের অধিকার নিশ্চিত হয় সে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। আগামী বছর বাংলাদেশ এ বিষয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছে। এতে বিশ্বের ১০০ টিরও বেশি দেশ অংশ নেবে। জলবায়ু অভিবাসন বিষয়ে জাতিসংঘের যে কমিটি রয়েছে, বাংলাদেশ ও জার্মানি তার কো-চেয়ার। তবে বাংলাদেশ সরকার শুধু একা নয়, নাগরিক সমাজকেও এ কাজে যুক্ত করার পদক্ষেপ নিয়েছে।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে পল্লীকর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান কাজী খলিকুজ্জামান আহমেদ বলেন, শিল্পোন্নত রাষ্ট্রগুলো যদি তাদের কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ না কমায়, তাহলে শুধু বাংলাদেশের মতো দেশগুলোই ডুববে না, উন্নত দেশগুলোকেও ডুবতে হবে। সারা পৃথিবীতে মস্ত বড় সংকট দেখা দেবে। তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক তহবিল গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড থেকে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এমন কথা ছিল না। কথা ছিল, জলবায়ু তহবিল অনুদান হিসেবে দেওয়া হবে। এ বিষয়গুলোকেও প্যারিস সম্মেলনে তুলে ধরতে হবে।

অনুষ্ঠানে জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, প্যারিস সম্মেলনে যাওয়া বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞদের যুক্ত করা হচ্ছে না। এতে বাংলাদেশ দল দুর্বল হয়ে পড়বে। কেননা পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এর সঙ্গে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা যুক্ত ছিলেন।

অপর জলবায়ু বিশেষজ্ঞ জিয়াউল হক মুক্তা বলেন, প্যারিসে যে চুক্তিটি হবে তা এমনভাবে হতে হবে যে, কোনো রাষ্ট্র যদি এই চুক্তি না মানে তাহলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ থাকবে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন, জলবায়ু বিশেষজ্ঞ আতিক রহমান ও বইটির প্রধান আলোকচিত্রী দীন মোহাম্মদ শিবলীসহ অনেকে বক্তব্য দেন।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.