বিছানার চাদর সাবধান হোন !

অক্টোবর ৭, ২০১৫

19সারাদিনের কাজের পরে বাসায় এসে বিছানায় ডুব দিতে ইচ্ছে করে সবারই। কিন্তু ওই আরামদায়ক বিছানাই যে আপনার কতোবড় ক্ষতি করতে পারে তা কী জানেন?

আপনার বিছানা কী করে ক্ষতি করবে? বিছানার চাদর দেখতে যতই নিরীহ মন হক না কেন, এর ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে রয়েছে মিলিয়ন মিলিয়ন জীবাণু। এগুলো সহজেই আপনাকে অসুস্থ করে দিতে সক্ষম।

বিছানার তোশক, চাদর, কাঁথা এবং বালিশের মাঝে জমে থাকে মানুষের দেহের কোষ। এটা শুনে অনেকেই অবাক হবেন। কিন্তু একজন মানুষের শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে ত্বকের কোষ ঝরে পড়ে। এসব কোষ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে বেঁচে থাকে ডাস্ট মাইট নামের এক ধরণের অতি ক্ষুদ্র পোকা। এসব পোকা একজন মানুষের অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণ হতে পারে। এর পাশাপাশি তৈরি করতে পারে বেশ কয়েক ধরণের অ্যালার্জি।

ডাস্ট মাইট নিজেরা আপনার তেমন ক্ষতি করবে না বটে, কিন্তু তাদের বর্জ্য এবং দেহাবশেষ অ্যালার্জির সৃষ্টি করতে পারে। হতে পারে একজিমা, কাশি, চোখ চুলকানো। যাদের অ্যাজমা আছে তাদের অসুস্থ করে দিতে পারে সহজেই। ঘুমের সমস্যা যে হতে পারে তা বলাই বাহুল্য।

ডাস্ট মাইট ছাড়াও আরও খারাপ খবর আছে। বিছানার চাদরে থাকতে পারে জীবাণু যা ফ্লু থেকে ফুড পয়জনিং পর্যন্ত বেশ কিছু অসুস্থতার সৃষ্টি করতে পারে। আপনি নিজের অজান্তেই এমন “সিক বেড সিনড্রোম” এ ভুগতে পারেন।

অসুস্থ হয়ে গেলে আমরা অনেকটা সময় বিছানায় কাটাই। এ রোগের জীবাণু অনেকদিন ধরে রয়ে যেতে পারে বিছানায়।

মানুষ সপ্তাহে ত্রিশ গ্রামের মতো ত্বকের মরা কোষ ঝরায়। যেহেতু আমরা অনেকটা সময় বিছানায় থাকি তাই এই ত্রিশ গ্রামের অনেকটাই বিছানায় থেকে যায়। তারমানে ডাস্ট মাইটের খাবারের ব্যবস্থা হয়ে গেলো। শুধু তাই না, আমাদের শরীরের উষ্ণতা এবং আর্দ্রতায় ডাস্ট মাইটের জীবনযাপনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয় বিছানায়। এ কারণে একটি বিছানায় ১০ মিলিয়নের মতো ডাস্ট মাইট থাকতে পারে।

বেশীরভাগ সময়েই আমরা দিনের বেলায় বাসা থেকে বের হবার সময়ে বেডরুমের দরজা জানালা লক করে যাই। ফলে বিছানার আর্দ্রতা সেখানেই থেকে যায়। ফলে ডাস্ট মাইটের জীবন আরও সহজ হয়ে যায়। দুই বছরের পুরনো একটা বালিশের ১০ শতাংশ জুড়েই থাকতে পারে ডাস্ট মাইট আর তাদের বর্জ্য। ভেবে দেখুন তো, এখনো কি বিছানাটাকে আরামদায়ক মনে হচ্ছে? ইচ্ছে হচ্ছে অফিস থেকে ফিরেই ঝাঁপিয়ে পড়তে?

চিন্তা করবেন না। এই ভয়াবহ সমস্যারও আছে সমাধান-

  • প্রতি সপ্তাহে বিছানার চাদর পরিবর্তন করুন
  • বিছানাপত্র ধুতে হবে অন্য কাপড় থেকে আলাদা করে
  • ডেটল বা স্যাভলন জাতীয় জীবাণুনাশক ব্যবহার করে ধুতে হবে বিছানার চাদর
  • গরম পানিতেও ধুতে পারেন চাদর
  • ঘুম থেকে ওঠার পর বিছানা যেন আলোবাতাস পায় এমন ব্যবস্থা করুন
  • বালিশ এবং তোশক নিয়মিত রোদে দেওয়া গেলে খুবই ভালো
  • সম্ভব হলে তোশক ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করুন নিয়মিত
  • বিছানায় অতিরিক্ত কুশন বা তুলার পুতুল রাখবেন না
  • সুতির তৈরি বিছানার চাদর ব্যবহারের চেষ্টা করুন

– See more at: http://www.priyo.com/2015/Oct/07/172959-.html#sthash.qoNzjF3E.dpuf

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.