রাশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঈদ উদ্যাপন
সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৫ রাশিয়ায় আজ ২৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপিত হচ্ছে। রুশ ভাষায় এ উৎসবকে বলা হয় কুরবান বাইরাম।
ঈদ উপলক্ষে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ার মুসলমানদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। রাশিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত তিনটি প্রদেশে ঈদ উপলক্ষে এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
রাজধানী মস্কোতে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও ব্যাপক উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশি ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ঈদুল আজহা উদ্যাপন করছেন।
স্থানীয় সময় সকাল আটটায় মস্কোর প্রোসপেক্ট মিরারা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। কয়েক লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান এখানে ঈদের নামাজ আদায় করেন। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল রাশিয়া ওয়ান কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে সরাসরি ঈদের জামাতের চিত্র সম্প্রচার করে। বেশ কয়েক বছর সংস্কার কাজের জন্য মসজিদটি বন্ধ থাকার পর বুধবার পুনরায় মুসল্লিদের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
প্রয়োজনের তুলনায় মস্কোতে মসজিদের সংখ্যা কম হওয়ায় নগর কর্তৃপক্ষ মস্কোর দুটি পার্কে এবার ঈদের জামাতের আয়োজন করে। মস্কো ও এর পার্শ্ববর্তী শহরের ৩৯টি মসজিদে ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয় বলে রাশিয়ার মুফতি পরিষদের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবারের মতো এবারও মস্কোতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঈদের সবচেয়ে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয় ভেদেনখার কিরগিজ প্যাভিলিয়নে। সকাল সাড়ে আটটায় ঈদের নামাজ পড়তে মস্কোর বিভিন্ন স্থান থেকে বাংলাদেশিরা ছুটে আসেন এখানে। মাওলানা জামাল উদ্দীন এতে ইমামতি করেন। স্থানীয় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা সাধারণত এখানেই ঈদের নামাজ পড়েন।
এ ছাড়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের একাংশ বাংলাদেশ দূতাবাসে ঈদের নামাজ আদায় করেন। সকাল নয়টায় এখানে জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন ইউনুস আলী। দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বাংলাদেশি বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিদের এখানে ঈদের নামাজ আদায় করতে দেখা যায়।
নামাজ শেষে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনার পাশাপাশি মুসলিম বিশ্বের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। বাংলাদেশিরা একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি ও কুশল বিনিময় করেন।
সাধারণত পরিবার নিয়ে মস্কোয় বাস করা প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনেকই সামর্থ্য অনুযায়ী কোরবানি দিয়েছেন। মস্কো নগরীর অভ্যন্তরে কোরবানি দেওয়া নিষিদ্ধ থাকায় নগরীর বাইরের কসাইখানায় গিয়ে পশু কোরবানি দেন প্রবাসীরা। এ জন্যে আগে থেকেই সংশ্লিষ্ট কসাইখানায় বুকিং দিতে হয়। ইউরোপের অনেক দেশেই এভাবে বুকিং প্রথায় কোরবানি চালু রয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাশিয়ায় প্রায় দুই কোটি মুসলমান বাস করেন। তাদের মধ্যে প্রায় ২০ লাখ মুসলমান বাস করেন শুধু মস্কোতেই। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীন হয়ে যাওয়া প্রজাতন্ত্রগুলোর অনেক মুসলমান রাশিয়ায় অভিবাসী হওয়ায় দেশটির মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে লক্ষণীয় ভূমিকা রাখছে।