হরতালে দুর্বৃত্তদের ‘টার্গেট’ রেলওয়ে

মার্চ ২০, ২০১৩

image_350_60566ঢাকা জার্নাল: দেশে সরকারবিরোধীদের বিক্ষোভ বা হরতালের সময় যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুন দেওয়া, রেললাইন উপড়ে ফেলার মতো ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে।

রেল লাইন উপড়ে ফেলার কারণে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে দীর্ঘ সময় রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার ঘটনা মঙ্গলবারের হরতালের দিনেও ঘটেছে।

রেলের নিয়মিত যাত্রী এবং কর্মকর্তারা মনে করেন, ট্রেনের মতো এত বড় গণ-পরিবহনে এ ধরনের নাশকতার ঘটনায় যেকোনো সময় বড় ধরনের প্রাণহানি ঘটতে পারে।

বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধী ১৮ দলীয় জোটের টানা হরতালের দ্বিতীয় দিনে রাজধানী ঢাকা থেকে সিলেটগামী আন্তঃনগর উপবন ট্রেনটি মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় লাইনচ্যুত হওয়ার ১১ ঘণ্টা পর রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হলেও, এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যাত্রীরা।

ট্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, ওই ট্রেনে ১৬টি বগির প্রতিটিতে ৬০ থেকে ৭০ জনের মতো যাত্রী ছিলো।

সে হিসেবে এক হাজারের বেশি যাত্রী বহনকারী ওই ট্রেনটি যদি তার নিয়মিত গতিতে চলতো তাহলে বড় ধরনের প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল।

তবে হরতালের সময় ট্রেন চালানোর ক্ষেত্রে গতি বেশ শিথিল রাখতে হয় বলে অনেকটাই রক্ষা পাওয়া গেছে- বলছিলেন কুলাউড়ার স্টেশন মাস্টার মহিদুর রহমান।

তিনি বলেন, “দুষ্কৃতিকারীরা রেললাইনের স্লিপার সরিয়ে পাথর দিয়ে ঢেকে রাখে যার কারণে আগে থেকে বোঝা যায়নি। হরতালের কারণে নির্দেশনা রয়েছে যেনো সতর্কভাবে ধীর গতিতে ট্রেন চালানো হয়, যাতে যেকোনো ক্ষেত্রে ট্রেন থামানো সহজ হয়।”

তিনি বলেন, “গতি কম থাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। তা নাহলে ট্রেনটির ১৬টি বগির প্রত্যেকটিতে যে ৬০ থেকে ৭০ জন যাত্রী ছিলো তাদের সবার প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল আর ট্রেন তো ধ্বংস হতোই।”

সাম্প্রতিক সময়ে হরতাল চলাকালে আরো অনেক এলাকাতেই রেল লাইন উপড়ে ফেলার ঘটনা ঘটেছে।

তবে বিরোধীদের বিক্ষোভ বা আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই নাশকতার ঘটনা ঘটলেও তারা এর দায় নিতে রাজি নয়।

তাদের বক্তব্য হচ্ছে, প্রতিবাদ বিক্ষোভের অংশ হিসেবে এমন ঘটনা ঘটতেই পারে এবং এর দায় সরকারের- বলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, “এসবের দায় সরকারের। আর সারাদেশে বিরোধী জোটের যেসমস্ত কর্মীরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তাদের সবাইকে নিয়ন্ত্রণ করাও সম্ভব হচ্ছে না। ভবিষ্যতের হরতালের সময় এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে।”

রেল লাইন উপড়ে ফেলার ক্ষেত্রে আগে থেকে জানা না থাকায় অনেক ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয় না।

তাছাড়া বিস্তৃত রেল লাইনের নিরাপত্তা দেওয়াও ততোটা সহজ কাজ নয় বলেও জানান স্টেশন মাস্টার মহিদুর রহমান।

রেল লাইন উপড়ে ফেলা ছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে জামায়াতে ইসলামীর ডাকে তিনদিনের টানা হরতালের সময় রাজধানী ঢাকায় কমলাপুর রেলস্টেশনে একটি আন্তঃনগর ট্রেনে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

দমকল বাহিনী পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ট্রেনটির একটি বগি সম্পূর্ণ পুড়ে যায় এবং একটি বগি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সূত্র: বিবিসি

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.