হরতালে দেশজুড়ে সংঘর্ষ, নিহত ১

মার্চ ১৯, ২০১৩

Lp_bivagio-porjae-18-dolioঢাকা জার্নাল: বিএনপিসহ  ১৮ দলীয় জোটের দুইদিনব্যাপী দেয়া হরতালের আজ শেষ দিন। সকাল থেকেই রাজধানীসহ সারাদেশে বিক্ষিপ্ত ভাঙচুর-সংঘর্ষ সংঘটিত হয়েছে। এতে  ১ জন মারা গেছে  গেছে।

মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে মল চত্ত্বর এলাকায় দুটি, সোয়া ১২টার দিকে টিএসসি এলাকায় দুটি এবং অমর একুশে হলের দিকে একটি হাতবোমা বিস্ফোরিত হয়।

রাজধানীর চানখারপুল ও নিমতলী মোড় থেকে পাঁচটি ককটেল উদ্ধার করে পুলিশ।

শাহবাগ পুলিশের পেট্রোল ইন্সপেকটর শহিদুল ইসলাম  জানান, বেলা ১১টার দিকে নিমতলী মোড়ে টহল দেয়ার সময় পুলিশ সদস্যরা প্যাকেটে মোড়ানো অবস্থায় হাতবোমাগুলো উদ্ধার করেন।

ওয়ারিতে হরতালের সমর্থনের মিছিল থেকে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপের খবর জানা গেছে। ঘটনাস্থলে  জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ফয়সাল আহমেদ সজল ও সাংগঠনিক সম্পাদক এবিএম মহসীনসহ পাঁচ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

বেলা পৌনে ১১টার দিকে রমনা থানার রেইনবো ক্রসিং এলাকায় হরতাল সমর্থকদের মিছিল থেকে গাড়ি ভাংচুরের চেষ্টাকালে রিপন ও সোহেল খান নামে আরো দুজনকে আটক করে পুলিশ।

সকালে বাবুবাজার সেতুর কাছে পুলিশের অবস্থানের কাছে দুটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

মঙ্গলবার  বেলা ১১টার দিকে সবুজবাগের মাদারটেক মোড় এলাকায় হরতালের সমর্থনে পেট্রোল ঢেলে গাড়িতে অগ্নিসংযোগের চেষ্টার সময় মনু মিয়াকে আটক করে পুলিশ।

সবুজবাগ থানার ওসি বাবুল মিয়া জানান, বোতলভর্তি পেট্রোলসহ হাতেনাতে আটক করা হয় মনু মিয়াকে । এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালতের হাকিম তাকে এক বছরের কারাদণ্ড দেন।

এর আগে সকালে আরামবাগে নটরডেম কলেজের সামনে হরতালের সমর্থনে মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানোর পর গ্রেপ্তার হন মোবারক।

টাঙ্গাইলের গোপালপুরে হরতালকারীদের সঙ্গে হরতালবিরোধীদের সংঘর্ষের সময় স্থানীয় এক ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত ইমরান হোসেন (২৫) গোপালপুর থানা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।

পুলিশ জানায়, সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা হরতালের সমর্থনে কোনাবাড়ীতে সড়ক অবরোধ করলে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া দেয়। কিছুক্ষণ পরে বিএনপি কর্মীরা সংগঠিত হয়ে এসে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়।

“এ সময় রামদার কোপে গুরুতর জখম হন ইমরান। প্রথমে তাকে গোপালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখান থেকে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।”

মৌলভিবাজারের কাছাকাছি এলাকায় হরতালকারীরা ট্রেন লাইনের স্লীপার খুলে ফেললে সিলেটগামী আন্তনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনটির ইঞ্জিন ও বেশ কয়েকটি বগি  লাইনচ্যুত হয়ে ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
এছাড়া হরতাল সমর্থকরা ফৌজদারহাট স্টেশনে গিয়ে রেললাইনে অবস্থান নেয় এবং স্টেশনে ভাংচুর চালায়।

বাংলাদেশ রেলওয়ের (পূর্বাঞ্চল) বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক সুকুমার ভৌমিক  জানান, ফৌজদারহাট রেল স্টেশন ভাংচুরের পর থেকে দুই দিক থেকে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে পাহাড়িকা ও চট্টলা এক্সপ্রেস প্রায় দুই ঘণ্টা বিলম্বিত হয়।

রাজশাহীতে হরতাল সমর্থকদের ছোড়া বোমার আঘাতে আহত হয়েছেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য।

এছাড়াও চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে হরতাল সমর্থকদের সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।

এর আগে গতকাল হরতালের প্রথম দিনে ককটেল বিস্ফোরন, একাধিক গাড়ি ভাংচুর এবং আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে।

সম্প্রতি বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে একটি সমাবেশে ককটেল বিস্ফোরণ ও একে কেন্দ্র করে সংঘটিত সহিংসতার পর পুলিশ দলটির যেসব নেতাকর্মীকে আটক করে তাদের মুক্তির দাবিতে সোমবার সকাল থেকে টানা দুই দিনের হরতালের একটি পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালন করছে ১৮ দলীয় জোট।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.