বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অস্ত্র রপ্তানিকারক চীন!

মার্চ ১৯, ২০১৩

Xm8-posterঢাকা জার্নাল: সুপরিচিত সুইডিশ থিংক ট্যাংক সিপ্রি’র ২০০৮ থেকে ২০১২ সালের রিপোর্টে নতুন চমক হল, বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অস্ত্র-রপ্তানিকারক হিসেবে চীন ব্রিটেনের স্থান নিয়েছে৷ তবে বাংলাদেশ ও ভারতেরও উল্লেখ রয়েছে এই রিপোর্টে৷

স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট বা সিপ্রি বিশ্বব্যাপী অস্ত্র আমদানি-রপ্তানির একটি ডেটাবেস রাখে৷ তবে সিপ্রি সেই তথ্য পাঁচ বছরের গড় পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে প্রকাশ করে, কেননা বছর বছর অস্ত্র কেনাবেচায় অনেক হেরফের হতে পারে৷

সিপ্রি’র রিপোর্ট অনুযায়ী ২০০৮ থেকে ২০১২, এই পাঁচ বছরে চীনের রপ্তানি বেড়েছে আগের পাঁচ বছর তুলনায় ১৬২ শতাংশ৷ যার ফলে অস্ত্র রপ্তানিকারকদের তালিকায় চীন অষ্টম স্থানের পরিবর্তে এখন পঞ্চম স্থানে৷ সমগ্র আন্তর্জাতিক অস্ত্র রপ্তানিতে চীনের ভাগ দুই শতাংশ থেকে বেড়ে পাঁচ শতাংশে দাঁড়িয়েছে৷

পাকিস্তান, মিয়ানমার, বাংলাদেশ

চীনের এই উত্থান যে মূলত পাকিস্তান বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র কেনার ফলে, সে’কথা সিপ্রির আর্মস ট্রান্সফার প্রোগ্রামের ডাইরেক্টর পল হলটর্ন নিজেই বলেছেন৷ পাকিস্তানই চীনের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র কিনেছে: চীনের মোট রপ্তানির ৫৫ শতাংশই গেছে পাকিস্তানে৷ চীনা অস্ত্রের গ্রাহকদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মিয়ানমার, তারা কিনেছে আট শতাংশ৷ তার পরেই আসছে বাংলাদেশ৷ বাংলাদেশ কিনেছে চীনা অস্ত্র রপ্তানির মোট সাত শতাংশ৷

শুধু এশিয়ার এই কোণটুকুতেই নয়৷ চীনা অস্ত্র কেনে, এমন দেশগুলির মধ্যে উত্তর আফ্রিকার আলজিরিয়া এবং মরক্কো, অথবা দক্ষিণ অ্যামেরিকার ভেনেজুয়েলাকে পাওয়া যাবে৷ চীন আলজিরিয়াকে তিনটি ফ্রিগেট রণতরী বিক্রি করেছে৷ ভেনেজুয়েলা কিনেছে আটটি পরিবহণ বিমান৷ মরক্কো কিনেছে ৫৪টি ট্যাংক৷

সামরিক আত্মবিশ্বাস

অস্ত্র রপ্তানিকারকদের মধ্যে চীনের নবার্জিত পঞ্চম স্থান সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হং লেই বলেছেন, চীন দায়িত্বশীল অস্ত্র রপ্তানিকারক এবং কঠোরভাবে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলে৷ অপরদিকে চীন আজ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিই শুধু নয়, সেই সঙ্গে চীনের সামরিক আত্মবিশ্বাসও বেড়েছে৷ ১৯৮৯ সালের তিয়ানানমেন স্কোয়ারের ঘটনাবলীর পর চীন পশ্চিমা দেশগুলি থেকে অস্ত্র অবরোধের সম্মুখীন হয়৷ ফলে দেশজ অস্ত্রশিল্প চীনের পক্ষে অতি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে৷ আজ চীনে তৈরি সামরিক সরঞ্জাম রুশ কি পশ্চিমা অস্ত্রশস্ত্রের সঙ্গে তুলনা করা চলে, বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা৷ ওদিকে চীনের সামরিক বাজেট বেড়েই চলেছে: এ’বছরের গণকংগ্রেসে তা বেড়েছে দশ শতাংশের বেশি৷

রপ্তানি-আমদানি

আন্তর্জাতিক অস্ত্র রপ্তানি বাণিজ্যে বিশ্বের প্রথম পাঁচটি দেশ হল: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (৩০ শতাংশ), রাশিয়া (২৬ শতাংশ), জার্মানি (৭ শতাংশ), ফ্রান্স (৬ শতাংশ) এবং চীন (৫ শতাংশ)৷ আমদানির ক্ষেত্রে তালিকার শীর্ষে রয়েছে ভারত (১২ শতাংশ); দ্বিতীয়, চীন (৬ শতাংশ); তৃতীয়, পাকিস্তান (৫ শতাংশ); চতুর্থ, দক্ষিণ কোরিয়া (৫ শতাংশ) এবং পঞ্চম, সিঙ্গাপুর (৪ শতাংশ)৷

সবশেষে সংকট পীড়িত ইউরোপের দিকে চোখ ফেরালে দেখা যাবে, ২০১২ সালে ইটালি এবং নেদারল্যান্ডস মার্কিন এফ-৩৫ জঙ্গিবিমানের অর্ডার কমিয়েছে, ওদিকে বুলগেরিয়া, ক্রোয়েশিয়া ও রোমানিয়া সেকেন্ডহ্যান্ড জঙ্গিবিমান কেনার পথ ধরছে৷ এমনকি পর্তুগাল তার নতুন এফ-১৬ বিমানের বহরটির জন্য খদ্দের খুঁজছে, যেমন স্পেন চাইছে তার সদ্য কেনা টাইফুন ইউরোফাইটার জঙ্গিজেটগুলিকে আবার বেচে দিতে!

সূত্র: এসি / এসবি (রয়টার্স, এপি, এএফপি)

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.