ইটালির নৌরক্ষী ইস্যু এখন আদালতের এক্তিয়ারে

মার্চ ১৯, ২০১৩

vibro1ঢাকা জার্নাল: ভারতীয় মৎস্যজীবী হত্যার ঘটনায় সোমবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়লেন নতুন দিল্লির ইটালীয় রাষ্ট্রদূত ডানিয়েল মানচিনি৷ কারণ আদালতে উপস্থিত হয়ে উনি ব্যক্তিগত হলফনামা দিয়েছিলেন৷ সেই হলফনামা তিনি ভঙ্গ করেছেন৷

ভারতীয় মৎস্যজীবী হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত দুজন ইটালীয় নৌরক্ষীকে ভোট দিতে যাবার জন্য স্বদেশে যাবার অনুমতি দিয়েছিলেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এই শর্তে যে, চার সপ্তাহ পরে তাঁদের ভারতে ফিরিয়ে আনা হবে৷ এই মর্মে সুপ্রিম কোর্টে উপস্থিত থেকে ব্যক্তিগত হলফনামা পেশ করেছিলেন নতুন দিল্লিতে নিযুক্ত ইটালি রাষ্ট্রদূত ড্যানিয়েল মানচিনি৷

‘সেই হলফনামা ভঙ্গ করায় রাষ্ট্রদূতের কূটনৈতিক রক্ষাকবচ থাকতে পারেনা৷ তিনি তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছেন৷’ শুনানিকালে রাষ্ট্রদূতের কূটনৈতিক রক্ষাকবচের দাবি খারিজ করে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিনজন বিচারকের এক বেঞ্চ এই কড়া অবস্থান নেন৷ আদালত মনে করেন, সরকারি স্তরে কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বা হবে, সেটা সুপ্রিম কোর্টের বিবেচ্য নয়৷ এক্ষেত্রে দেশের শীর্ষ আদালতের সঙ্গে রাষ্ট্রদূতের আচরণই বিচার্য৷

রাষ্ট্রদূতের পক্ষে বলা হয়, কেন ঐ দুজন নৌরক্ষী ফিরে আসেননি, সেজন্য তিনি ব্যক্তিগতভাবে দায়বদ্ধ নন৷ ১৯৬১ সালের জেনিভা কনভেনশন অনুসারে কোনো রাষ্ট্রদূতকে আদালতে তোলা যায়না, আটক বা গ্রেপ্তার করা যায়না বা দেশ ছাড়তে বাধা দেয়া যায়না৷ উল্লেখ্য, টেকনিক্যালি মানচিনিকে আটক করা হয়নি৷ ভারতের যে কোনো স্থানে তিনি যেতে পারেন৷

দিল্লির কূটনৈতিক মহলের মতে, কূটনৈতিক রক্ষাকবচ থাকা সত্ত্বেও মানচিনি সুপ্রিম কোর্টে ব্যক্তিগত হলফনামা দিয়ে আদালতের এক্তিয়ারে পড়ে ঠিক কাজ করেননি৷ পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ইটালীয় রাষ্ট্রদূত ভারত ছাড়তে পারবেন না৷ সেজন্য শীর্ষ আদালত সংশ্লিষ্ট সব বিভাগকে নির্দেশ দেন৷

এই নির্দেশ পালন করা হবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে জানানো হয়েছে৷ বলা হয়েছে, ভারত-ইটালির ভবিষ্যৎ সম্পর্ক কী হবে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ ইটালীয় নৌরক্ষীদের ভারতে আনার চার সপ্তাহের মেয়াদ শেষ হবে ২২শে মার্চ৷ পরবর্তী শুনানি ২রা এপ্রিল৷ তার আগে পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া সরকারের পক্ষে সম্ভব হবেনা৷

কূটনৈতিক মহলের মতে, রোমে ভারতীয় দূতাবাসের মান কমানো হতে পারে, বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত রাখা হতে পারে৷ ইটালির সঙ্গে হেলিকপ্টার ক্রয়চুক্তি বাতিল করা হতে পারে৷ দিল্লির ইটালি দূতাবাস বা মানচিনি অবশ্য এই নিয়ে কোনো মন্তব্য করেন নি৷

বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ রোম চাইছে আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে সন্তোষজনক সমাধান৷ রোমের দাবি ঘটনাটি ঘটেছিল আন্তর্জাতিক জলসীমায়৷ ভারতের দাবি, সেটা হয়েছিল ভারতীয় জলসীমায়৷ তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.