নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত সংখ্যালঘু নেতারা

মার্চ ১৮, ২০১৩

1362423459ঢাকা জার্নাল: দেশে সাম্প্রতিক সময়ে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় দেশটির সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তারা বলছেন, হামলার ঘটনায় সরকার তাদের পুরোপুরি নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে এবং সামনের দিনগুলোতে ট্রাইব্যুনালের অপেক্ষমাণ রায়ের পরে আরও ব্যাপক হামলার শিকার হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা ।

তবে সরকারের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হচ্ছে।

মানবতা-বিরোধী অপরাধে ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড দিয়ে একটি রায় ঘোষণার পর দেশের বিভিন্ন জায়গায় দলটির সমর্থকরা যে সহিংস বিক্ষোভ চালিয়েছে সে সময় অনেক জেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি ও মন্দির আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

যে সব জায়গায় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে তার মধ্যে চট্টগ্রামের কিছু এলাকা, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ, নাটোরের সিংড়া এবং দিনাজপুর, ফরিদপুর ও সাতক্ষীরা অন্যতম।

সেসব জায়গার অনেক গুলো এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এসে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পরিস্থিতিতে তারা সামনের দিনগুলোতে নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা করছেন।

ওইসব হামলার ঘটনার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল একে অপরকে অভিযুক্ত করার প্রেক্ষাপটে এই সম্প্রদায়ের মানুষেরা সামনের দিনগুলোতে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।

সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজল দেবনাথ বলছিলেন, ‘মাত্র দুটি রায়ের পরই এমন অবস্থা, সামনে একটির পর একটি রায় আসবে। গোলাম আজমের মত অভিযুক্তের রায় এখনো অপেক্ষমাণ। তারপর রয়েছে দণ্ড কার্যকর করবার প্রক্রিয়া। আরও পরে আছে নির্বাচন। সবকিছু মিলিয়ে আমরা শঙ্কিত।’

তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

এ নিয়ে ভবিষ্যতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ে নিরাপত্তাহনীতার আশঙ্কার কোনও কারণ নেই উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দীন খান আলমগির বলেন, ‘ঘটনা ঘটার সাথে সাথে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিধানে এবং জড়িতদের ধরার ব্যাপারে এবং আইনি ব্যবস্থা নিতে প্রশাসন তৎপর। অধিকাংশ লোককেই ধরা হয়েছে এবং বিচারের জন্য তদন্ত শেষে আইনে সোপর্দ করা হচ্ছে। সরকারের নেয়া পদক্ষেপের প্রেক্ষাপটে ভবিষ্যতে কোনও রায়ের পরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর কেউ হামলা চালাতে সাহস করবে বলে আমরা মনে করি না’।

তবে আক্রান্ত এলাকাগুলোতে ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ তুলে ধরে এ ব্যাপারে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার আহ্বান জানান কাজল দেবনাথ ।

একটা ব্যাপক ধারণা রয়েছে যে এসব হামলার সাথে বিরোধী জামায়াত ও বিএনপি সমর্থকেরা জড়িত।

তবে মি. দেবনাথ অভিযোগ করেন, কোনও কোনও ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করে তাদের তাদের জমি দখলের উদ্দেশ্যও রয়েছে এবং এসব ক্ষেত্রে সরকার দলীয় সমর্থকেরাও হামলা চালিয়েছে বলে তারা অভিযোগ পাচ্ছেন।

এদিকে, এই সমস্ত হামলার ঘটনায় বিরোধী দলের পক্ষ থেকেও নিন্দা জানিয়ে হামলাকারী হিসেবে সরকার দলীয় সমর্থকদের দায়ী করা হয়।

তবে এসব অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, সাম্প্রতিক এসব হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য দেশটির সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.