একটা বড় বরাদ্দ চট্টগ্রামের জন্য দিবেন,মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আগস্ট ২২, ২০১৫

kaderচট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন ও রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৮ আগস্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা এবং রাস্তাঘাটের সমস্যা সমাধানে একটা বড় বরাদ্দ চট্টগ্রামের জন্য দিবেন। তিনি ইতিমধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন। চট্টগ্রামের মেয়রকে ডেকেছেন। মেয়র প্রকল্প দিলেই পাস হয়ে যাবে। চট্টগ্রাম মহানগরীর সড়কের উন্নয়ন এবং জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য এটা চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন ও রাস্তা সংস্কারের জন্য ।’ মন্ত্রী বলেন, ‘ইতিমধ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাস্তাঘাট ও নালা নর্দমার উন্নয়নে বড় বরাদ্দ পেয়েছে।’চট্টগ্রামসহ সারাদেশের সড়কমহাসড়কের বেহাল অবস্থার জন্য টানা বর্ষণ ও কাজের খারাপ মানকে দায়ী করে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ‘তিন দশকে বাংলাদেশে এত বৃষ্টিপাত হয়নি। এবার বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। একটানা বর্ষণ হয়েছে চট্টগ্রাম ও ঢাকায়।’

তবে নির্মিত রাস্তাগুলোর কাজের মান অনেক ক্ষেত্রে সঠিক হয় না বলে স্বীকার করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি কেন স্পটে যায় তা অনেকেই জানতে চান। আমি কাজের মান ঠিক আছে কিনা দেখার জন্য স্পটে যায়। আমি না গেলে কাজের মান যা আছে সেটাও থাকতো না। রাস্তার কাজের মান অনেক ক্ষেত্রে যথাযথ হয় না। ফাঁকিবাজি আছে। এগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। এগুলো জবাবদিহিতার আওতায় আনবো। আমাদের মনিটরিং কমিটি সবার পারফরম্যান্স নিয়ে আলাপ আলোচনা করছে। ঠিকাদার ও প্রকৌশলীদের কৈফিয়তের আওতায় আনা হবে। ভালো কাজের জন্য পুরস্কার দেব। খারাপ কাজের জন্য প্রকৌশল ও ঠিকাদার উভয়কে শাস্তি দেওয়া হবে।’ ঢাকাচট্টগ্রাম মহাসড়ক ও জয়দেবপুরময়মনসিংহ সড়ক ভারি বৃষ্টির মধ্যেও ঠিক আছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রামকক্সবাজার সড়কের কিছু কিছু পয়েন্টের অবস্থা খুবই নাজুক। দোহাজারির অবস্থা খুবই খারাপ। এখানে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নেই। নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকলে রাস্তা যত ভালোই করেন এটা টিকবে না।’

তিনি বলেন,‘মহাসড়কের বাজার অংশে রিজিড প্যাভমেন্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যাতে পানি জমতে না পারে। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বাজেট বরাদ্দের জন্য অর্থমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন।’

দেশে ৯৬টি জাতীয় মহাসড়ক আছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মাত্র ২২টি মহাসড়কের পৌনে তিন হাজার কিলোমিটার অংশে থ্রি হুইলার বন্ধ করেছি। আঞ্চলিক মহাসড়কে বন্ধ করিনি। জেলা সড়কেও বন্ধ করিনি।’ যেখানে থ্রি হুইলার বন্ধ করা হয়েছে সেখানে শতকরা ৯০ ভাগ দুর্ঘটনা কমে গেছে বলে দাবি করেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন,‘তিনমাস পরে কোন মহাসড়কে থ্রি হুইলার চলতে পারবে না। সে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অনেকে সমালোচনা করেন। আমি সমালোচনা হাসিমুখে শুনি। সমালোচনা থেকে শুদ্ধ হওয়া যায়।’

থ্রি হুইলারসহ ধীর গতির পরিবহনের জন্য আলাদা লেন করা হচ্ছে জানিয়ে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ‘১৭৫২ কিলোমিটার রাস্তা চারলেনে উন্নীত করার জন্য এডিবির সহায়তায় ইতিমধ্যে ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি করেছি। আগামী মাস থেকেই জয়দেবপুরএলেঙ্গা ৭০ কিলোমিটার সড়ক চারলেন হতে যাচ্ছে। এগুলোতে আমরা বাইলেইনের ব্যবস্থা করছি। নির্মাণাধীন চার লেনের সড়কগুলোর পরিকল্পনায় বাইলেন ছিল না। এগুলোর কাজ শেষ হলে সঙ্গে সঙ্গে বাইলেনের জন্য ডিপিপি করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। বাইলেন করে দেব যাতে ধীরগতির গাড়িগুলো চলতে পারে।’

২১ আগস্ট ইতিহাসের কালিমা লিপ্ত দিন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা। বঙ্গবন্ধু কন্যা ছিলেন প্রধান সে হামলার টার্গেট। সেদিন আমি নিজেও আহত হয়েছিলাম। এখনো আমার শরীরে ১৪১৫টি স্প্লিন্টার বয়ে বেড়াচ্ছি। এখনো আহত, পঙ্গু অনেকে কাতরাচ্ছে। এমনভাবে অনেকে আহত হয়েছেন যাদের সারাজীবন কাতরানো শেষ হবে না।’ তিনি বলেন, ‘২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া মাঝখানে একটু ধীর হয়ে গিয়েছিল। প্রথমে এটাতো তদন্তই হতে দেয়নি।’ ওবায়দুল কাদের বলেন,‘বিচারাধীন বিষয় নিয়ে বেশি কথা বলতে চাই না। আইনমন্ত্রী ইতিমধ্যে বলেছেন এ বছরের ডিসেম্বরে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। সরকারও এ ব্যাপারে খুব সিরিয়াস। প্রাইম মিনিস্টার নিজেই যেখানে প্রাইম টার্গেট সেখানেতো গাফেলতি থাকার কোন কারণ থাকতে পারে না।’

মতবিনিময়কালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ব্যবস্থাপনা কমিটির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ার, সাধারণ সম্পাদক মহসীন চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলমগীর সবুজ, কার্যনির্বাহী সদস্য শহীদ উল আলম। আরো উপস্থিত ছিলেন, প্রেসক্লাবের সদস্য মনজুর কাদের মনজু ও নুর মোহাম্মদ রফিক।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.