পিঁপড়াকে মাতাল করে দেহরক্ষী বানায় শুয়োপোকা

আগস্ট ২, ২০১৫

Caterpillarঢাকা জার্নাল:সাপসহ নানা শিকারি প্রাণীর খাবার তালিকায় পছন্দের খাবার হিসেবে রয়েছে স্বাস্থ্যবান ও রসালো শুয়োপোকা। তবে প্রজাপতির একধরণের শুয়োপোকা রয়েছে যারা আত্মরক্ষার জন্য বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে। নিজেদের আত্মরক্ষার জন্য তারা দেহরক্ষী হিসেবে পিঁপড়াকে ব্যবহার করে থাকে।

সম্প্রতি একটি জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে গবেষকরা এ তথ্য জানান। তাদের মতে, জাপানি ওয়াকব্লু  শুয়োপোকা তার শরীর থেকে এক ধরনের চটচটে মিষ্টি স্বাদের রস নিঃসরণ করে যা খেয়ে পিঁপড়া মাতাল হয়ে যায়, ফলে তারা শুয়োপোকাকে ছেড়ে যায় না। একই সঙ্গে  পিঁপড়াগুলো ভীষণ রকম হিংস্র হয়ে ওঠে আর ধারে-কাছে কোনো শিকারি প্রাণী এলে তাদের আক্রমণ করে।

বিজ্ঞানীরা ভাবছেন, মিষ্টি রস পিঁপড়াদের মস্তিষ্কের আচরণ বদলে দেয়। ফলে তারা তাদের কলোনি ভুলে গিয়ে শুয়োপোকার চারপাশে দেহরক্ষীর মতো পড়ে থাকে।

কারণ হিসেবে জাপানের কোবে ইউনিভার্সিটির ইকোলস্টি অধ্যাপক মাসারু হোজো এবং সহকর্মীরা প্রতিবেদনে বলেন, মিষ্টি স্বাদের রস মস্তিষ্কে ডোপামিন (একটি হরমোন, যা মানব মস্তিষ্ক ও শরীরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রাণীদের শরীরেও প্রাকৃতিকভাবেই এটি উৎপন্ন হয়। কিন্তু স্থায়ীভাবে মাদক সেবনের ফলে উৎপন্ন নেশায় ডোপামিনিক নিউরোট্রান্সমিশনের ফলে জিনের আচরণে বৈপরীত্য দেখা দেয়। সাধারণত ফেনিসিডিল কোকেইন, নিকোটিন, ক্যানবিনয়েড ইত্যাদির প্রভাবে এমনটা হয়ে থাকে) এর পরিমাণ কমিয়ে দেয়।

কেবল তাই নয়, মাতাল হওয়ার পরে পিঁপড়াগুলোর কর্মক্ষমতাও কমে আসে। তবে শুয়োপোকা নির্দেশ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এরা শিকারি প্রাণীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।

এক কথায় ব‍লা যেতে পারে, পিঁপড়াগুলোকে রীতিমতো শুয়োপোকা দাস বানিয়ে ফেলে।

গবেষক তাদের গবেষণাগারে পিঁপড়াগুলোর হরমোনের মাত্রা পরীক্ষা করেন। তারা দেখেন, শুয়োপোকা পিঁপড়াগুলোর শরীরে রেসারপাইন (রাওডিকজিন, সারপালান, সারপাসিল নামেও পরিচিত) কেমিক্যাল প্রবেশ করায়। ফলে পিঁপড়া এমন মাতাল হয় যে তাদের কলোনি ভুলে যায়।

তবে কিছু কিছু প্রজাতির শুয়োপোকা কেবল মাতাল করেই রাখে না, পিঁপড়াদের খাবারও খেতে দেয়।

ঢাকা জার্নাল, আগস্ট ০২, ২০১৫

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.