হুমকি উপেক্ষা করে আশুলিয়ায় গণজাগরণ সমাবেশ

মার্চ ১৬, ২০১৩

0,,16578842_303,00ঢাকা জার্নাল: হেফাজতে ইসলামের প্রতিরোধের ঘোষণার পরও শুক্রবার আশুলিয়ায় গণজাগরণ মঞ্চের সমাবেশ হয়েছে৷ সমাবেশে যোগ দেন ছাত্র-শিক্ষক, শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষ৷ডা. ইমরান এইচ সরকার জানিয়েছেন, চট্টগ্রামেও মহাসমাবেশ হবে৷

চট্টগ্রামের পর আশুলিয়া গণজাগরণ মঞ্চের সমাবেশও প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছিল হেফাজতে ইসলাম৷ কিন্তু তাদের হুমকি উপেক্ষা করেই শুক্রবার বিকেলে হাজোরো মানুষ যোগ দেন ঢাকার অদূরে আশুলিয়ার এ সমাবেশে৷ তবে সামবাশ শুরুর আগে, দুপুর ১২টার দিকে ফ্যান্টাসি কিংডমের সামনে সমাবেশ মঞ্চের কাছে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়৷ চলন্ত বাস থেকে ছোড়া ককটেলের এ বিস্ফোরণে ২ জন পথচারী আহত হয়েছেন৷

আশুলিয়া শিল্পঞ্চল, বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শত শত শ্রমিক গণজাগরণ মঞ্চের সমাবেশে যোগ দেন৷ যোগ দেন আশেপাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ছাত্রসহ সব শ্রেণির মানুষ৷ তারা সবাই যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলনের সঙ্গে থাকার প্রত্যয় জানান৷

গণজাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক ডা. ইমরান এইচ সরকার ডয়চে ভেলেকে জানান, দেশের মানুষ তাদের সঙ্গে আছেন৷ তারা যে দাবি তুলেছেন, তা সব শ্রেণির মানুষের প্রাণের দাবি, কোনো হুমকি বা সন্ত্রাসী তৎপরতা দিয়ে তাদের প্রতিহত করা যাবেনা, তাদের অহিংস আন্দোলন চলবে৷ তিনি বলেন, যারা গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তাদের দেশের মানুষ চেনেন৷

স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধপরাধীদের বাঁচাতেই তারা এই অপপ্রচার চালাচ্ছে বলেও দাবি্ করেন ইমরান এইচ সরকার৷ হেফাজতে ইসলামের হুমকি এবং ১৪৪ ধারা জারি করায় ১৩ই মার্চ চট্টগ্রামের সমাবেশ হয়নি৷ সেখানে কি আর গনজাগরণ মঞ্চের সমাবেশ হবেনা? এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. ইমরান বলেন, চট্টগ্রামে মহাসমাবেশ করে এর জবাব দেয়া হবে৷ দু’একদিনের মধ্যেই মহাসমাবেশের তারিখ ঘোষনা করা হবে৷

এদিকে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মাঈনুদ্দিন রুহী শুক্রবার চট্টগ্রামে এক সমাবেশে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ ভেঙ্গে দেয়ার দাবি জানান, নয়তো ৯ই এপ্রিল লংমার্চ করে ঢাকায় এসে তারা গণজাগরণ মঞ্চ গুড়িয়ে দেবেন৷ এমন হুমকির জবাবে ইমরান এইচ সরকার বলেন, ‘‘কোনো উস্কানি দিয়ে শাহবাগের আন্দোলনকে সহিংস করা যাবেনা৷ আশুলিয়ার সমাবেশ প্রমাণ করেছে কোনো হুমকিতে দেশের মানুষ ভয় পায়না৷ এই দেশে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি হবেই৷”

হেফাজতে ইসলামের গণজারণ মঞ্চের বিরুদ্ধে এই অবস্থানকে অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন ওলামা মাশায়েক তৌহিদী জনতা সংহতি পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ৷ শোলাকিয়ার ইমাম হিসেবে সারাদেশে সুপরিচিত মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে যাঁরা আছেন তাঁরা সরল এবং ধর্মপ্রাণ মুসলমান৷ তাঁদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে৷ যাঁরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করতে চায় তারাই তাঁদের বিভ্রান্ত করছেন৷ শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়৷ এটি ইসলাম বিরুদ্ধ কোনো দাবি নয়৷ ইসলামও এই অপরাধের বিচারের পক্ষে৷”

তাঁর মতে, গণজারণ মঞ্চকে‘নাস্তিকদের মঞ্চ’ বলা কোনোভাবেই ঠিক নয়৷ তবে ব্যক্তিগতভাবে কেউ যদি পবিত্র ধর্ম ইমলামের অবমাননা করে থাকেন তার বিচার তিনিও চান৷ তাই বলে গণজাগরণ মঞ্চের ওপর এর দায় চাপানো এবং তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়াও ঠিক নয় বলে মনে করেন তিনি ৷ তিনি আশা করেন, শিগগিরই এই বিভ্রান্তির অবসান হবে৷ ওলামা মাশায়েক তৌহিদী জনতা সংহতি পরিষদের চেয়ারম্যান মনে করেন, যুদ্ধাপরাধী এবং সন্ত্রাসী দল হিসেবে জামায়াত শিবিরকেও নিষিদ্ধ করা উচিত৷

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.