দেশের রাজনীতি আজ বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে

নভেম্বর ২৫, ২০১৫

ঢাকা: জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস যদি থেকে থাকে তবে তা বিপদের কারণ। কিন্তু আবার আইএস আছে বললে সহযোগিতার নামে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো বাংলাদেশে ঢুকে পড়তে পারে। তাই খোলামেলা পরিবেশে আইএসের 05অস্তিত্ব নিয়ে কিছু না বলার পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।

বুধবার (২৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে কমরেড নুরুল হক মেহেদীর স্মরণ সভায় তিনি এ পরামর্শ দেন। সভার আয়োজন করে কমরেড নূরুল হক মেহেদী শোকসভা জাতীয় কমিটি।

সভার প্রধান অতিথি আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, আইএস থাকলে আমাদের বিপদ আছে। আইএস আছে এটা খোলামেলা পরিবেশে আমাদের বলাও উচিত নয়। তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো বাহিনী সহযোগিতার নামে আমাদের দেশে ঢুকে পড়তে পারে।

জঙ্গিবাদ প্রশ্নে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করে তিনি বলেন, আজ আমাদের সরকার ও প্রধানমন্ত্রী বারবার প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন দেশে আইএস নেই। কিন্তু তিনি যখন বিরোধী দলে ছিলেন, তখন বলতেন দেশে জঙ্গি আছে, তালেবানে ভরে গেছে।

অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, আজ মধ্যপ্রচ্যের দিকে তাকালেই দেখা যায়, সেখানে জাতীয়তাবাদী চেতনা নিয়ে জঙ্গিবাদ তৈরি হচ্ছে। ওইসব দেশগুলোতে ধর্ম বেশি প্রাধান্য পায়। তাই ধর্মভিত্তিক মৌলবাদী ও জঙ্গি তৈরি হচ্ছে। নির্বোধের মত বিভ্রান্ত মন নিয়ে অনেকই ধর্ম বিশ্বাসে জঙ্গিবাদী সংগঠনে যুক্ত হচ্ছে, আত্মপ্রকাশ করছে।

জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বামপন্থি দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ফজলুল হক বলেন, আজ সারাবিশ্বের বামপন্থি দলগুলোকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে বিদেশি সৈন্য প্রত্যাহারের দাবি তোলা উচিত। এজন্য প্রত্যেকটি রাষ্ট্র থেকেই দাবি তুলতে হবে। আজ ঢাকায় শুরু হলে কাল কলকাতা, পিকিংসহ সারা বিশ্বেই মধ্যপ্রাচ্য  থেকে বিদেশি সৈন্য প্রত্যাহারের দাবি উঠবে। ধীরে ধীরে বন্ধ হবে জঙ্গিবাদ।

বামপন্থিদের ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, বিশ্ব বাস্তবতা বদলে গেছে। তাই বামপন্থি রাজনীতিকদের সব কিছুতেই লক্ষ্য স্থির করে কাজ করতে হবে। প্রত্যেকটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে আলাদা লক্ষ্য স্থির করতে হবে। এজন্য সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। যা হবে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের বিকল্প শক্তি।

নূরুল হক মেহেদীর জীবনী সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, কমরেড নূরুল হক মেহেদীর জীবনী জানলেই তার জীবন সংগ্রামের অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করা যাবে। তিনি ভেঙে যাওয়া বামপন্থি দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য আজীবন চেষ্টা চালিয়েছেন। অতি অল্প বয়েসই মেহেদী কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হয়েছেন। জনগণের অধিকার ও সংগ্রামের প্রতি সারাজীবনই শ্রদ্ধাশীল ছিলেন তিনি।

স্মরণসভায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, দেশের রাজনীতি আজ বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে। সর্বত্র লুটতরাজের রাজনীতি চলছে। বামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো এক হয়ে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারলেই কেবল এ ধারা বন্ধ হবে।

তিনি বলেন, বামপন্থি দলগুলোর নিশান যেহেতু এক, তাই আন্তরিক হলেই নিশানাও এক হতে পারে। বামপন্থি দলগুলোর ঐক্যই পারে দেশের রাজনীতির দুর্যোগ কাটিয়ে বড় বিকল্প শক্তি তৈরি করতে।

নভেম্বর ২৫, ২০১৫

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.