লন্ডনে মুসলিম বিদ্বেষ বেড়েছে ৩০০ শতাংশ

নভেম্বর ২৪, ২০১৫

11প্যারিসে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর এক সপ্তাহের ব্যবধানে লন্ডনে মুসলিম বিদ্বেষ বেড়েছে ৩০০ শতাংশের বেশি। যুক্তরাজ্য সরকারের মুসলিম বিদ্বেষ প্রতিরোধ বিষয়ক কার্যনির্বাহী গ্রুপের প্রস্তুত করা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। লন্ডনের প্রভাবশালী ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকার পলিটিক্যাল সম্পাদক অলিভার রাইট তার প্রতিবেদনে জানিয়েছেন সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের জন্য তৈরি করা এক  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৩ নভেম্বরে প্যারিসে হামলার পর থেকে ব্রিটেনে উদ্বেগ জনকহারে ইসলাম বিদ্বেষী অপরাধ বাড়ছে। লন্ডনের উলউইচে  ২০১৩ সালে এক মুসলিম যুবকের হাতে ব্রিটিশ সৈন্য লী রীগ্বি খুন হওয়ার পর ইসলাম বিদ্বেষ বেড়েছিল ১১৫ শতাংশ এবং প্যারিস হামলার পর তা এ সপ্তাহে বেড়েছে ৩শ’ শতাংশেরও বেশি।

এ ধরনের অপরাধ দমন বিষয়ক হেলপ লাইন সংস্থা টেল মামা-এর রেকর্ডকৃত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভিকটিমদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শারীরিক ও মৌখিক আক্রমণের শিকার হয়েছেন। আর অবমূল্যায়ন বা মানহানির ঘটনা তো আছেই। এমনকি যারা লাঞ্ছিত হয়েছেন তাদের পুলিশ কিংবা কমিউনিটি গ্রুপগুলোর কাছে বলারও কোনো সাহস ছিল না। তারা ছিলেন ভিতসন্ত্রস্ত। এসব ঘটনার অধিকাংশ ঘটেছে পাবলিকপ্লেসসহ বাস, ট্রেন বা মসজিদের আশপাশের স্থান গুলোতে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, এ ধরনের মুসলিম নির্যাতন ব্রিটেনে খুব সাধারণ বাপ্যারে পরণত হয়েছে।

এই বিদ্বেষে অধিকাংশ ভিকটিম হচ্ছেন ১৪ বছর থেকে ৪৫ বছর বয়সী তরুণী ও নারী যারা ইসলামের ঐতিহ্যবাহী পোশাক হিজাব পরে থাকেন। আর অপরাধীরা হচ্ছেন শেতাঙ্গ ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী তরুণ ও যুবক। রেকর্ডকৃত ৩৪টি ঘটনার মধ্যে দেখা গেছে ৮ জন ছিলেন হিজাব পরা তরুণী। ভিকটিমদের অনেকেই বলেছেন, অভিযোগ কেন্দ্র থেকে তাদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে তারা যেন একলা বের না হন। অন্তত অর্ধেক সংখ্যক ভিকটিম বলেছেন, তারা ঘরের বাইরে বের হতে রীতিমত ভয় পাচ্ছেন। আক্রমনকারীদের ভয়ঙ্কর শারীরিক ভঙ্গী, অশ্লিল ভাষায় গালাগালি এমনকি শারীরিক নির্যাতনও করে থাকে।   টিউব ট্রেনের যাত্রি মিস.অ্যাশলে পোইস বলেন, তিনি প্রতিদিনের মত ট্রেনে যাচ্ছিলেন।

তার সামনের সিটে বসা শেতাঙ্গ এক যুবক হঠাৎ আক্রমনাত্মক ভঙ্গিতে তার দিকে তেড়ে আসে এবং অশ্লিল শব্দ উচ্চরণে গালি দিতে থাকে। এমনকি ব্রিটেনে বর্ণবাদী শব্দ উচ্চারণ মারাত্মক অপরাধ হলেও তাই সে করতে থাকে। এ সময়ে আক্রমনকারী প্যারিসের ঘটনা উল্লেখ করে বারবার তার ওপর হামলে পড়তে চাচ্ছিল। এডিনবার্গে এক ভিকটিমের মা জানিয়েছেন তার মেয়ের স্কুল বন্ধ করতে বাধ্য  হয়েছেন। মুসলিম কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ বলেছেন, সম্প্রতি যুক্তরাজ্য সরকার পুলিশের জন্য বরাদ্ধকৃত অর্থ কর্তন করায় খরচের অজুহাতে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অথচ  দিনদিন এ অবস্থা মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.