ইসলামাবাদ ১৯৭৪ সালের চুক্তির প্রতি সম্মান জানাতে ব্যর্থ হয়েছে

নভেম্বর ২৩, ২০১৫

30বাংলাদেশ আজ অভিযোগ করেছে যে, ইসলামাবাদ ১৯৭১ সালের অপরাধের জন্য দু’জনকে এখানে ফাঁসি দেয়ার বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ১৯৭৪ সালের ত্রিপাক্ষিক চুক্তির প্রতি সম্মান জানাতে ব্যর্থ হয়েছে। ঢাকায় ইসলামাবাদের দূতের কাছে দেয়া প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান ১৯৭১ সালে গণ নৃশংসতার অপরাধ করার জন্য তাদের চিহ্নিত ও দোষী নাগরিকদের বিচারের সম্মুখীন করার বিষয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পদ্ধতিগতভাবেই ব্যর্থ হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়, পাকিস্তান বাংলাদেশের জনগণ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তাদের ঐতিহাসিক দায়িত্ব এড়াতে পারে না। এতে বলা হয়, পাকিস্তান ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির বাইরে অব্যাহতভাবে বিভ্রান্তিকর, সীমিত ও আংশিক ব্যাখ্যা দিয়ে চলেছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে একটি সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর উপমহাদেশে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালে নয়াদিল্লীতে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান চুক্তি স্বাক্ষর করে। প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, চুক্তির অত্যাবশ্যকীয় চেতনা ছিল অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী স্থিতিশীলতা ও অভিন্ন সমৃদ্ধির জন্য সুপ্রতিবেশীমূলক ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করার পরিবেশ সৃষ্টি করা।

চুক্তিতে বলা হয়েছে, যুদ্ধাপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও গণহত্যার পরিকল্পনকারী ও সংঘটনকারীরা কখনও শাস্তি মওকুফ বা বিচার প্রক্রিয়া থেকে রেহাই পাবে না। প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, চুক্তি অনুযায়ী ইসলামাবাদ মুক্তিযুদ্ধকালে যুদ্ধাপরাধ করার জন্য অভিযুক্ত বিশেষ করে ১৯৫ জন পাকিস্তানী ‘যুদ্ধবন্দী’কে বিচারের সম্মুখীন করবে। ১৯৭৪ সালের ৯ এপ্রিল নয়াদিল্লীতে স্বাক্ষরিত ১৯৭৪ চুক্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যক্ত করেছেন যে, এসব যুদ্ধবন্দীদের দ্বারা সংঘটিত বাড়াবাড়ি ও অপরাধ অবশ্যই বিবেচনায় নিতে এবং আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।

প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়, ত্রিপাক্ষিক চুক্তিতে ইসলামাবাদ বলেছে যে, পাকিস্তান সরকার সংঘটিত যে কোন অপরাধের বিষয়ে নিন্দা জানাচ্ছে এবং গভীরভাবে দুঃখিত। বিচার প্রক্রিয়াকে ‘ত্রুটিযুক্ত বিচার’ বলে পাকিস্তানের মন্তব্য নাকচ করে দিয়ে প্রতিবাদলিপিতে পুনর্ব্যক্ত করা হয় যে, একটি ‘নিরপেক্ষ, যথাযথ, সুষ্ঠু, পক্ষপাতহীন ও স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এবং কোন রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছাড়াই দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রায় দেয়া হয়েছে।

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, বিচার প্রক্রিয়ায় কেবল তাদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধ বিবেচনায় নেয়া হয়েছে এবং তাদের রাজনৈতিক পরিচয় বা সম্পৃক্ততার বিষয়ে কিছুই করার ছিল না এবং পাকিস্তান একটি সার্বভৌম দেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে পক্ষপাতমূলক, ধার করা ও ভিত্তিহীন মন্তব্য করতে পারে না। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ মানবতা বিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার বিচারের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের অব্যাহত বিদ্বেষপরায়ন প্রচারণায় গভীরভাবে মর্মাহত এবং ব্যক্ত করছে যে এই বিষয়টি বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে কোন ভাল ফল বয়ে আনবে না।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.