জাতীয় ঐক্যের রাজনীতির আহ্বান জানালেন খালেদা

সেপ্টেম্বর ২, ২০১৫

kaledaবিএনপির ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনায় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ‘জাতীয় ঐক্যের রাজনীতি শুরুর’ আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কাউকে গালাগাল, হানাহানিতে বিশ্বাস করি না। আমরা প্রতিশোধ-প্রতিহিংসার রাজনীতি করতে চাই না। আসুন জাতীয় ঐক্যের-উন্নয়নের রাজনীতি শুরু করি।’
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় খালেদা জিয়া সভাপতিত্ব করেন।
এর আগে সকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে খালেদা জিয়া দলের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীকে নিয়ে শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং ফাতেহা পাঠ করেন।
এদিকে ঢাকার বাইরে কয়েকটি জেলায় পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান।
ঢাকায় আলোচনা সভায় বক্তৃতার শুরুতেই খালেদা জিয়া দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র নেই। মানবাধিকার, আইনের শাসন, খবরের কাগজের স্বাধীনতা নেই। এমনকি কথা বলার অধিকারও নেই। কেবল ক্ষমতাসীনেরাই বলছে। তাদের ভাষা এত নোংরা, জবাব দিতেও লজ্জা লাগে।’
বিএনপির চেয়ারপারসন ছাত্রলীগের কড়া সমালোচনা করে বলেন, ‘তারা আজ শিক্ষককে, কাল মহিলাদের, পরশু ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার, পুলিশকে পেটাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে? সরকার কি ছাত্রলীগকে মানুষ পেটানোর লাইসেন্স দিয়েছে? অথচ বিএনপির হলে ধরে ধরে মামলা দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমিসহ এখানে কেউই মামলার বাইরে নই। উনাদের (আওয়ামী লীগ) নামেও মামলা ছিল। সাড়ে সাত হাজার মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। নেত্রীর নামে ১৫টি ছিল। ক্ষমতায় এসে সব খালাস। এখন তিনি সুফি হয়ে গেছেন।’

‘হাসিনা ক্ষমতায় থাকার জন্য উন্মাদ হয়ে গেছে’ মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘গুম, খুন, নির্যাতনের সব দায় হাসিনাকে নিতে হবে। র‍্যাব ও অন্যান্য এজেন্সি যা করেছে, হাসিনার অর্ডারে করেছে। তাই এর সব দায় হাসিনার। আর পরগাছাদের।’

প্রতিহিংসার রাজনীতি না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমরা সেবা-উন্নয়নের রাজনীতি করব। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করব। কোনো জজ সাহেবকে বলব না অমুককে ধরেন, শাস্তি দেন। কর্মকর্তাদের নির্ভয়ে কাজ করতে বলব।’ তিনি কারও নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘এখন কোনো আইন-নিয়ম নেই। জজরা সোশ্যাল ফাংশনে যেতেন না। আজ দেখছি, সরকারের সঙ্গে আসা-যাওয়া চলছে। অমুক দাওয়াত তমুক দাওয়াতেও অংশ নিচ্ছেন। সেটা আগে ছিল না। একজন জজ পাবলিকলি পলিটিক্যাল বক্তব্য দিয়ে এসেছেন। তিনি নিরপেক্ষ বিচার করবেন কীভাবে?’

খালেদা জিয়া দল পুনর্গঠনের কথা উল্লেখ করে নেতাদের সতর্ক করে দেন। তিনি বলেন, যাদের দলের ও নেতার প্রতি আনুগত্য আছে, আন্দোলন-সংগ্রামে শরিক হবে, তাদের নেতৃত্বে আনতে হবে। যারা ফাঁকিবাজ, মিথ্যাবাজ, তাদের পেছনের সারিতে নিয়ে যেতে হবে।

আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, আ স ম হান্নান শাহ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.