বান্ধবীকে ধর্ষণের হুমকি দিয়ে ছিনতাই: দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র গ্রেপ্তার

সেপ্টেম্বর ১, ২০১৫

এদের মধ্যে রাজীব বাড়ৈ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং অমিত কুমার দাস জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বলে পুলিশ জানিয়েছে।

গ্রেপ্তার দুজনই সরকার সমর্থক ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগে যুক্ত বলে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে  জানান।

সোমবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার হয়ে শাহবাগ থানায় থাকা রাজীবও নিজেকে ছাত্রলীগের কর্মী বলে স্বীকার করেন।

গত ১৬ অগাস্ট ছিনতাইয়ের শিকার নাট্যকর্মী আনসার আলী লিমনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ অমিত ও রাজীবকে গ্রেপ্তার করে। সোমবার সন্ধ্যায় তাদের টিএসসিতে দেখে লিমনই পুলিশে খবর দিয়েছিলেন।

সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় শাহবাগ থানায় গিয়ে দেখা যায়, পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. ইব্রাহিম খান শাহবাগ থানার ওসির চেয়ারে বসে আছেন। তার পাশে হাতকড়া পরা অবস্থায় দাঁড়িয়ে রাজীব।

সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসায় রাজীব নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করলে এক পুলিশ কর্মকর্তা হাসতে হাসতে বলেন, “ওদের দুজনকে গ্রেপ্তারের পর অমিত বলছিল, সে ছিনতাই করেনি। আমি তার ঘড়ি, হাতের আংটি আর পায়ের স্যান্ডেল ব্যাংকের ভিডিও ফুটেজের সঙ্গে মিলে গেছে জানানোর পর সে নীরব হয়ে যায়।”

লিমনের কাছ থেকে এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নেওয়ার পর টিএসসির ডাচ বাংলা ব্যাংকের বুথে গিয়ে তার একাউন্ট থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে নিয়েছিল ছিনতাইকারীরা।

লিমন বলেন, তিনি আবেদন করলে ডাচবাংলা ব্যাংকের বুথের ওই সময়কার ভিডিও ফুটেজ পুলিশকে দেওয়া হয়।

এছাড়া তার ছিনতাই হওয়া মোবাইল থেকে দুই হাজার টাকা আরেকটি মোবাইলে নম্বরে ট্রান্সফার করে নেওয়ার তথ্যও জোগাড় করে পুলিশকে দিয়েছিলেন তিনি।

লিমন বলেন, “সেদিনের পর থেকে ছিনতাইকারীদের খুঁজে বের করতে প্রত্যেকদিন টিএসসিতে আসতাম। আজ (সোমবার) সন্ধ্যার পর টিএসসি সংলগ্ন যাত্রী ছাউনির পাশে এসে দেখি দুই ছিনতাইকারী রিকশায় বসে আছে। সঙ্গে সঙ্গে শাহবাগ থানায় খবর দিই।”

শাহবাগ থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক  বলেন, ছিনতাইয়ের শিকার যুবকের শনাক্ত করার পর টিএসসি এলাকা থেকে রাজীব ও অমিতকে গ্রেপ্তার করা হয়। ব্যাংকের ভিডিও ফুটেজ দেখেও তাদের ছিনতাইয়ে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

গত ১৬ অগাস্ট রাত ৮টার দিকে বান্ধবীকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছবির হাট হয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতর দিয়ে শিল্পকলা একাডেমির দিকে যাচ্ছিলেন লিমন।

উদ্যানের ভেতরেই কয়েকজন তাদের আটক করে চাপাতির ভয় দেখিয়ে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন এবং এটিএম কার্ড নিয়ে নেয় বলে শাহবাগ থানায় করা মামলায় অভিযোগ করেন তিনি।

লিমন বলেন, ছিনতাইকারীরা তার এটিএম কার্ডের পিন নম্বর চায়। না হলে তার বান্ধবীকে ধর্ষণের হুমকি দিলে ভয়ে তিনি তাদের নম্বর বলে দেন। পরে ছিনতাইকারীদের দুজন ডাচবাংলা ব্যাংকের বুথে গিয়ে ৫০ হাজার টাকা তুলে নেয়। এরপর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ কমিশনার মো. ইব্রাহিম খান বলেন, “ছিনতাইয়ের ঘটনাটি পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখেছে। ওই ঘটনার পর থেকে অপরাধীদের ধরতে পুলিশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অন্তত ১০ দিন অভিযানে গিয়েছিল।”

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.