ডিজিটাল চলচ্চিত্রের নামে নাটক হচ্ছে: চম্পা
আগস্ট ৩১, ২০১৫ চলচ্চিত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির আগমন ঘটেছে অনেক দিন হলো। কিন্তু চলচ্চিত্রের গুণগত মান কি সত্যিই পরিবর্তিত হয়েছে? – এমন প্রশ্ন তুলে একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী অভিনেত্রী গুলশান আরা চম্পা বলছেন, ডিজিটাল চলচ্চিত্রের নামে যা তৈরি হচ্ছে সেগুলোকে নাটক বলাই যুক্তিসঙ্গত হবে।
ম্প্রতি গ্লিটজের সঙ্গে আলাপে চম্পা বললেন, “সত্যি বলতে কী, আমার দেশে ডিজিটাল চলচ্চিত্রের নামে যা হচ্ছে তা টিভি নাটক ছাড়া আর কিছু নয়। অন্যান্য বিষয়ের মতো চলচ্চিত্রেও প্রযুক্তির ব্যবহার হতে পারে। এ নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু প্রযুক্তি ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে চলচ্চিত্রের সঠিক আদলটাও ধরে রাখতে হবে। নইলে চলচ্চিত্র, নাটক, টেলিছবি বলে আলাদা করে কোনোটা চেনানো যাবে না।”
অনেকদিন ধরেই চলচ্চিত্রে অনিয়মিত চম্পা, তার কারণটাও ব্যাখ্যা করলেন।
“মনের মতো গল্প বা চরিত্র খুঁজে পাইনি বলে আমি সিনেমাতে নিয়মিত কাজ করছি না। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোয় বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে ছবি নির্মিত হচ্ছে, অথচ এ দেশের ছবির কাহিনি এখনও একই ধাঁচের রয়ে গেছে। অন্যদিকে ডিজিটাল চলচ্চিত্রের নামে যা নির্মিত হচ্ছে, সেগুলোও মনে দাগ কাটতে পারেনি। এ কারণেই চলচ্চিত্র থেকে দূরে সরে ছিলাম।”
চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী এই অভিনেত্রীর ‘আরও ভালোবাসবো তোমায়’ সিনেমাটি মুক্তি পেল সম্প্রতি। ক্যারিয়ারের শুরুর দিনগুলোর মতো চম্পা এখনও সিনেমা মুক্তির আগে দুশ্চিন্তায় ভোগেন বলে জানালেন।
“আমার তো মনে হয় ছবি মুক্তি পাওয়া একটি মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আমার কাছে ছবি মুক্তি মানে একই সঙ্গে উৎসবের মতো, আবার ব্যবসায়িক সাফল্য পাবে কিনা তা নিয়ে আছে রাজ্যের দুশ্চিন্তা। তবে এই ছবিটি ভালো করবে তা আমি জানতাম। গল্পে আমি নতুন এক বাঁক আনতে পেরেছি বলে বিশ্বাস করি।”
চলচ্চিত্রের পাশাপাশি চম্পা অভিনয় করছেন টিভি নাটকে। সম্প্রতি তিনি অভিনয় করলেন ধারাবাহিক ‘উজান গাঙের নাইয়া-২’- এ । এই ধারাবাহিকের সুলতানা চরিত্রটি নিয়ে চম্পা বলেন, “এই ধারাবাহিকটি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে তৈরি। উপকূলীয় অঞ্চলের অবহেলিত মানুষের জীবন সংগ্রাম দেখানো হয়েছে এতে। উপকুলীয় অঞ্চলে শুটিং করেছি আমরা। সরাসরি ওখানে গিয়ে কাজ করাটা কঠিন। তারপরও সবার চেষ্টায় ভালভাবে শেষ হয়েছে।”
এই নাটকে অভিনয় করতে গিয়ে চম্পার মনে পড়েছে ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ সিনেমার মালা চরিত্রটির কথা।
“সুলতানার স্বামী প্রচণ্ড লোভী। স্বামীর কাজের প্রতিবাদ করি আমি। এতে কাজ করতে গিয়ে বারবার ‘পদ্মানদীর মাঝি’ ছবিটির কথা মনে হচ্ছিল। সত্যি, অনেক দিন পর অভিনয়ে আত্মতৃপ্তি পেয়েছি।”
সম্প্রতি জসিমউদ্দিনের ‘বোবা কাহিনী’ অবলম্বনে নির্মিতব্য একটি চলচ্চিত্রের কাজ শুরু করছেন চম্পা। মা-ছেলের সম্পর্কের কাহিনি নিয়ে সিনেমাটি নির্মাণ করছেন মোহাম্মদ হোসেন।
গুলশান আরা চম্পা
উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র
- পদ্মা নদীর মাঝি
- লাল দরজা
- টার্গেট
- তিনকন্যা
- লটারী
- বিরহ ব্যাথা
- নিষ্পাপ
- সহযাত্রী
- ভেজা চোখ
- বাপ বেটা ৪২০
- নীতিবান
- কাশেম মালার প্রেম
- প্রেম দিওয়ানা
- শংখনীল কারাগার
- অন্যজীবন
- মনের মানুষ (২০১০)[৫]