এগিয়েছে ‘কোমেন’, ৮০-১০০ কি. মি. বেগে হাওয়া

জুলাই ৩০, ২০১৫

bondor_sotorkotaঢাকা জার্নাল: সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ উপকূলে আঘাত হেনে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’।

ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের ৫৪ কি. মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কি. মি.।  যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ৮৮ কি. মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের এই ঝড় বুধবার (২৯ জুলাই) মধ্যরাতের তুলনায় বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রামের দিকে অন্তত ১০ কিলোমিটার এগিয়েছে বলে জানিয়েছে ‌আবহাওয়া বিভাগ।

সকাল ৯টায় এটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫ কি. মি. দক্ষিণপশ্চিম, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮০ কি. মি. উত্তরপশ্চিম, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২০৫ কি. মি. পূর্ব-দক্ষিণপূর্ব এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৫ কি. মি. দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যে চট্টগ্রাম উপ‍কূল অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া অব্যাহত রয়েছে।

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ০৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ০৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

এছাড়া মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ০৫ (পাঁচ) নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উপকূলীয় জেলা বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ০৫ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠী, পিরোজপুর, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’র প্রভাবে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৮০-১০০ কি. মি. বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমি ধ্বসের আশঙ্কার কথা জানিয়েছে অধিদফতর।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার এবং সমুদ্রগামী জাহাজগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

কক্সবাজার  আবহাওয়া অধিদফতরের সহকারী আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বাংলানিউজকে  জানান, বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) দুপুর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে কক্সবাজারে ৭০/৯০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’। এ সময় ৫-৮ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।

এদিকে, ক্ষয়ক্ষতি কমাতে জেলা প্রশাসন থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বিমান চলাচল। পাশাপাশি বিমানবন্দরের লাইটিং ব্যবস্থা বন্ধ করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে জেলার কর্তব্যরত সব চিকিৎসক ও নার্সদের ছুটি।

ঝূঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবহৃত হবে আশ্রয় কেন্দ্র হিসাবে।

ঢাকা জার্নাল, জুলাই ৩০, ২০১৫

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.