‘কালক্ষেপণ গার্মেন্ট শিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টি করবে’
জুলাই ২৯, ২০১৫ ঢাকা জার্নাল: তিন মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস প্রদান; মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং বে-আইনীভাবে বন্ধ কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে আন্দোলনরত সোয়ান গার্মেন্ট শ্রমিকদের লাগাতার অবস্থানের আজ আঠারতম দিন শেষ হলো। তার পরেও পাওনা পরিশোধ হয়নি শ্রমিক-কর্মচারিদের। সমাবেশ থেকে শ্রমিকরা জানাচ্ছেন আন্দোলন কঠোর হচ্ছে। অস্থিরতার দিকে যাচ্ছে গার্মেন্টস শিল্প।
অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি বলেন, শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে যে কালক্ষেপণ দেখছি তা উদ্দেশ্য প্রণদিত। এই কালক্ষেপণ গার্মেন্ট শিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টি করবে।
বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে চলমান অবস্থান কর্মসূচিতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কার্যকরী সভাপতি শ্রমিক নেতা সাদেকুর রহমান শামীমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সহ-সভাপতি জিয়াউল কবির খোকন, সাধারণ সম্পাদক কাজী রুহুল আমীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম মিন্টু, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মঞ্জুর মঈন, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সালাম বাবুল, জয়নাল আবেদিন, নুরুল ইসলাম, এ্যাড. আসাদুল্লাহ বাদল, কাজী মোতাহার হোসেন, সোয়ান কারখানার শ্রমিক নেতা শেখ ফরিদ, মোর্শেদা আক্তার, জাকির হোসেন, মাকসুদা বেগম, মিনতি রাণী প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে একটি বিশাল মিছিল মতিঝিলের ইসলামী ব্যাংক জোনাল কার্যালয়, দিলকুশা প্রধান কার্যালয়, দৈনিক বাংলা মোড়ে অবস্থিত শ্রমভবনের সামনের সড়ক প্রদক্ষিণ করে। দুপুরে গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালস শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এস এম আব্দুল লতিফের নেতৃত্বে নেতৃবৃন্দ আন্দোলনরত শ্রমিকদের সাথে সংহতি জানান। ইউনিয়নের সদস্যদের দেয়া ১০০ কেজি চাল ও ৩০ কেজি ডাল আন্দোলনরত শ্রমিকদের হাতে হস্তান্তর করেন।
আন্দোলনরত শ্রমিকদের সাথে সংহতি জানিয়ে জননেতা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে যে কালক্ষেপণ দেখছি তা উদ্দেশ্য প্রণদিত। এই কালক্ষেপণ গার্মেন্ট শিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টি করবে। যারা শ্রমিকের পাওনা পরিশোধে বিলম্ব করছে তারা গার্মেন্ট শিল্পের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তিনি আরও বলেন, যথাসময়ে সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করলে শ্রমিকদের এমন দুর্দশায় পরতে হত না। ফলে শ্রমিকদের জীবনের এই সংকটের দায় দায়িত্ব সরকার কোনোভাবেই এড়াতে পারেনা। আঠারদিন ধরে শ্রমিকরা রাস্তায় অবস্থান করছে অথচ সরকার নির্বিকার এটা প্রমাণ করে সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পরেছে।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে শ্রমিক নেতা সাদেকুর রহমান শামীম শ্রমমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত সময় নিয়েছিলেন, সমাধান করতে পারেন নি। বলেছিলেন আজ জানাবেন, আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আসেনি। এ অবস্থায় আমরা বাধ্য হচ্ছি সমস্ত শিল্পাঞ্চলে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি দিতে। তিনি আরও বলেন, পত্র-পত্রিকা মারফত অনেক কথাই আমাদের কানে আসছে। এই সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে পাওনা পরিশোধ করুন।
ঢাকা জার্নাল, জুলাই ২৯, ২০১৫।