ফের নামঞ্জুর মুকুলের জামিনের আবেদন
ঢাকা জার্নাল: সাংবাদিক স্ত্রী নাজনীন আক্তার তন্বীকে নির্যাতন ও যৌতুকের মামলায় গাজী টেলিভিশন থেকে চাকরিচ্যুত সাংবাদিক রকিবুল ইসলাম মুকুলের জামিনের আবেদন ফের নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার (১২ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহের নিগার সূচনার আদালতে মুকুলের জামিনের আবেদন জানান তার আইনজীবী। শুনানি শেষে এ আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত।
জামিনের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন মুকুলের আইনজীবী গোলাম মোস্তফা খান। জামিনের বিরোধিতা করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, অ্যাডভোকেট কাজী নজীবউল্লাহ হিরু, রিপন কুমার বড়ুয়া, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি ও অ্যাডভোকেট মবিনুল ইসলাম।
মামলার বাদিনী দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক নাজনীন আক্তার তন্বী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ৬ জুলাই ম্যাজিস্ট্রেট শামসুল আরেফিনের আদালত মুকুলের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করলেও তার কথিত প্রেমিকা মেহেরুন বিনতে ফেরদৌস সিঁথিকে জামিন দেন।
সিঁথির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে সাংবাদিক স্ত্রী তন্বীর ওপর নির্যাতন করেন মুকুল। গত ২৫ জুন তন্বী তার স্বামী মুকুল ও সিঁথির বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুকের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মুকুলকে গত ২৬ জুন দিবাগত রাতে আটক করে পুলিশ। পরদিন ২৭ জুন আদালতের নির্দেশে তাকে ১ দিনের রিমান্ডে নেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ পারভেজ। ২৮ জুন রিমান্ড শেষে মুকুলকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন আদালত।
অন্যদিকে গত ২ জুলাই মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অমিত কুমার দে’র আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান সিঁথি। বিচারক সিঁথিকে তার স্বামী ঢাকা ব্যাংকের মতিঝিল শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপ্যাল অফিসার রাজিউল আমিনের জিম্মায় জামিন দিতে চাইলেও রাজিউল সিঁথিকে নিজের ঘরে ফিরিয়ে নিতে অসম্মতি জানান। এ অবস্থায় আদালত সিঁথির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
মামলায় তন্বী অভিযোগ করেন, ২০১৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর একমাত্র মেয়ে চন্দ্রমুখী মারা যাওয়ার পর শোকে তিনি পাঁচতলা থেকে লাফ দিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হন। এরপর দীর্ঘদিন হাসপাতালে ছিলেন। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে আবার তারা দু’জন সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
কিন্তু এর মধ্যে সিঁথির সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন মুকুল। এ নিয়ে কথা বললে স্বামী মুকুল বিভিন্ন সময়ে তন্বীকে অন্তঃসত্বা অবস্থায় শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। মুকুল তাকে কয়েকবার নির্যাতন করার সময় তার আর্তনাদ মোবাইলে সিঁথিকে শুনিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন তন্বী।
একবার রক্তাক্ত অবস্থায় সহকর্মীরা বাসা থেকে তন্বীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। এর কিছুদিন পর তার দ্বিতীয় কন্যার জন্ম হয়। কিন্তু সন্তানের জন্মের পর থেকে কখনোই খোঁজ নিতেন না মুকুল।
তন্বীর অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে মুকুল তার কাছ থেকে যৌতুকের জন্য টাকাও নিয়েছেন।
ঢাকা জার্নাল, জুলাই ১২, ২০১৫