জিটুজি’র বিকল্প খুঁজতে মালয়েশিয়ায় প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী

জুন ২৪, ২০১৫

Probashiঢাকা জার্নাল: সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যেতে সাড়ে ১৪ লাখ বাংলাদেশি নিবন্ধন করলেও এ পর্যন্ত সরকারিভাবে দেশটিতে গেছে মাত্র আট হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক।

এর ফলে অবৈধপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সরকারও পড়েছে দারুণ সমালোচনার মুখে। এমন অবস্থায় মালয়েশিয়ায় শ্রমিক রফতানি বাড়াতে জিটুজির বিকল্প ভাবছে সরকার। এ বিষয়ে আলোচনা করতে মঙ্গলবার মালয়েশিয়া গেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

সাত সদস্যের ওই প্রতিনিধি দলে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ এবং প্রবাসী কল্যাণ সচিব খন্দকার ইফতেখার হায়দার চৌধুরীও আছেন।

জানা যায়, দুদেশের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে জনশক্তি নিয়োগ ত্বরান্বিত করার দাবি জানাবে বাংলাদেশ।

ঢাকা ছাড়ার আগে টেলিফোনে প্রবাসী কল্যাণ সচিব জানান, মালয়েশিয়া সরকারের আমন্ত্রণে আমরা দেশটিতে যাচ্ছি। জিটুজি চুক্তির আওতায় কীভাবে বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি সংখ্যক শ্রমিক সেখানে পাঠানো যায় সে বিষয়ে আলোচনা হবে।

তিনি বলেন, সমুদ্রপথে বাংলাদেশ ও মায়ানমার থেকে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক যাওয়ার ঘটনা দেশটির সরকারকে আলোড়িত করেছে। শ্রমিকের চাহিদা থাকা মালয়েশিয়া তাই জিটুজি’র পাশাপাশি বিকল্প ব্যবস্থার কথাও ভাবছে।

তবে স্বল্প মূল্যে অভিবাসনের বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হবে। ‘বর্তমানে আমরা মাত্র ২৮ হাজার টাকায় শ্রমিক পাঠাচ্ছি’ যোগ করেন প্রবাসী কল্যাণ সচিব।

জিটুজি’র পরিবর্তে বাণিজ্যিকভাবে শ্রমিক পাঠানোর সিদ্ধান্ত আসবে কী না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে বিশেষ কোন প্রস্তাব আসেনি। তবে আগামী ২৪জুন অনুষ্ঠেয় দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সব ধরনের সম্ভাবনার ব্যাপারে আমরা আলোচনা করব।

বাংলাদেশে প্রতিনিধি দলের কর্মসূচি থেকে জানা যায়, তারা মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। আগামী ২৮ জুন তাদের দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

এদিকে শ্রমবাজার পরিস্থিতি ঠিক করতে সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর আনা প্রফেশনাল ভিসার ছাড়পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অথচ জিটুজি চুক্তির পর থেকে মালয়েশিয়া বাদে অন্য যেকোন দেশ থেকে চাহিদা আনতে বলা হতো রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের।

বেসরকারি খাতের একশ্রেণীর রিক্রুটিং এজেন্সি মাত্রাতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয় নেয়ার কারণে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ বন্ধ করেছিলো মালয়েশিয়া।

বিগত মহাজোট সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০১২ সালে জিটুজি চুক্তির মাধ্যমে সরকারি পর্যায়ে কর্মী পাঠানো শুরু হয়। ২০০৯ সালে শ্রমবাজারটি বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো কয়েক লাখ টাকায় যে কর্মী পাঠিয়েছে, সেখানে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকায় জিটুজি পদ্ধতিতে কর্মী পাঠায় সরকার। এতে অভিবাসন ব্যয় কমে আসলেও তিন বছরে মাত্র আট হাজার কর্মীকে মালয়েশিয়ায় পাঠানো সম্ভব হয়েছে। যদিও ২০১২ সালের নভেম্বরে চুক্তি সই হওয়ার সময় বলা হয়েছিলো, কয়েক মাসেই কমপক্ষে ১০ হাজার কর্মী পাঠানো হবে।

ঢাকা জার্নাল, জুন ২৪, ২০১৫

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.