হরতালে রাজধানীতে যান চলাচল স্বাভাবিক

এপ্রিল ৭, ২০১৫

jamঢাকা জার্নাল: মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মো. কামারুজ্জামানের ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল রাখার প্রতিবাদে দেশজুড়ে জামায়াতের ডাকে টানা দু’দিনের হরতাল চলছে।
 
তবে মঙ্গলবার (০৭ এপ্রিল) সকাল ৬টায় হরতাল শুরু হলেও সাড়ে ৯টা পর্যন্ত রাজধানীর চিত্র দেখে বোঝার উপায় নেই যে, হরতাল চলছে। 

সকাল থেকেই রাজধানী জুড়ে বিভিন্ন রুটে পর্যাপ্ত সংখ্যক যাত্রীবাহী পরিবহন চলাচল করতে দেখা গেছে। এতে বিভিন্ন  সিগন্যাল পয়েন্টে যাত্রীবাহী বাসের জটলা তৈরি হয়। গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে নির্দিষ্ট সময়ে ছেড়ে যাচ্ছে দূরপাল্লার বাস।
হরতাল শুরুর পরপর যাত্রীবাহী পরিবহন কম দেখা গেলেও, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবহনের চাপে বিভিন্ন সিগন্যালে এ জটলার সৃষ্টি হয়।
 
সকাল থেকে রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, মৌচাক, খিলগাঁও,  শান্তিনগর, পুরানা পল্টন মোড়, মতিঝিল শাপলা চত্বর, গাবতলী, ফার্মগেট, শাহবাগ, সায়েদাবাদ জনপথ, যাত্রাবাড়ী মোড়, বাড্ডা, উত্তরা, বনানী, মহাখালী মোড়সহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
 
গাবতলীর মাজার রোডের কাউন্টার থেকে ঝিনাইদহ লাইনের বাসের টিকিট বিক্রেতা জাহাঙ্গীর বাংলানিউজকে জানান, সকাল থেকেই নিয়মিত বাস ছেড়ে যাচ্ছে। হরতালের কারণে কোনো শিডিউল পরিবর্তন হচ্ছে না। যাত্রীও পাওয়া যাচ্ছে যথেষ্ট।

গাবতলী থেকে বিভিন্ন রুটের সব গাড়ি যথাসময়ে ছেড়ে যাচ্ছে বলেও জানান জাহাঙ্গীর।
 
এদিকে, কোনো কোনো স্থানে বাসে ওঠার জন্য আফিসগামী মানুষের জটলা ও হুড়োহুড়ির দৃশ্যও দেখা গেছে। রামপুরা টিভি ভবনের সামনে, মালিবাগ মোড়, মধ্য বাড্ডা, যাত্রাবাড়ী, মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বর ও কাজীপাড়ায় বাসগুলোতে অফিসগামী মানুষের চাপ লক্ষ্য করা গেছে।
 
ফার্মগেটে কথা হয় বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা রিয়াজুল ইসলামের সঙ্গে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, হরতাল-অবরোধ কোনো কিছুতেই ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ থাকে না। নির্ধারিত সময়েই অফিস খোলে। অন্যান্য দিনের মতো আজও স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে। রাস্তায় কিছুটা ঝুঁকি থাকলেও হরতালের মধ্যেই অফিস যেতে হচ্ছে।
 
কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও, হরতালের নাম শুনলেই মানুষের মধ্যে এক ধরনের ভীতি কাজ করে। তাই হরতালের মধ্যে ব্যাংকের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চললেও, অন্য স্বাভাবিক দিনের তুলনায় গ্রাহকের উপস্থিতি ও লেনদেন কিছুটা কম থাকে, যোগ করেন এ ব্যাংক কর্মকর্তা। 
 
অন্যদিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে হরতালের সমর্থনে কোনো ধরনের মিছিল বা পিকেটিং চোখে পড়েনি। পাওয়া যায়নি কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদও। প্রতিটি রুটে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও রিকশার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ব্যক্তিগত পরিবহনের খুব একটা চাপ না থাকলেও, যাত্রীবাহী পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

সুপ্রভাত পরিবহনের চালক আরিফের সঙ্গে কথা হয় মালিবাগ রেলগেট মোড়ে। রাজধানীতে প্রায় ৬ বছর ধরে গাড়ি চালাচ্ছেন তিনি। জীবন-জীবিকার তাগিদে এর আগের হরতালগুলোতেও নিয়মিত গাড়ি চালিয়েছেন আরিফ।
 
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধ- হরতালে নিয়মিত গ‍াড়ি চালিয়েছি। প্রথম দিকে একটু ভয় করলেও গত দু’মাস ধরে নামে মাত্র চলা অবরোধ-হরতালে সব ভয় কেটে গেছে। 

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্তভাবে বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সোমবার (৬ এপ্রিল) সকালে রিভিউয়ের এ রায় ঘোষণা করেন। প্রতিবাদে দেশজুড়ে ‍মঙ্গল ও বুধবার হরতালের ডাক দেয় দলটি।

ঢাকা জার্নাল, এপ্রিল ০৭, ২০১৫।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.