পুড়ে যাওয়া মানুষের পাশে প্রধানমন্ত্রী

জানুয়ারি ২৭, ২০১৫

burn_PM_sm_103022329ঢাকা জার্নাল: ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে পেট্রোল বোমাসহ বিভিন্ন হামলায় আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারের পক্ষ থেকে আক্রান্তদের আর্থিক সহায়তা, উন্নত চিকিৎসা সেবা, আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থাও করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে এ কথা জানানো হয়েছে।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সরাসরি, রেফার্ড ও ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৮৭ জন। এদের মদ্যে বর্তমানে ভর্তি রয়েছে ৫০ জন।

এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরাসরি বা রেফার্ড হয়ে আসা ভর্তিরোগীর সংখ্যা ১০জন। ঢাকা সম্মিলিত সামারিক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনজন। দেশের অন্য হাসপাতালে রয়েছেন আরও ১৩০ জন রোগী।

হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন ১১জন (২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত)।

বর্তমানে সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি মোট রোগীর সংখ্যা ৭৪ জন।

প্রাথমিক সহায়তা হিসেবে ঢাকার সব রোগীকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাত খরচ হিসেবে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান দিয়েছেন।

ঢাকার বাইরে ভর্তি অনেককেই আওয়ামী লীগ নেতারা প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক অনুদান পৌঁছে দিয়েছেন। রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, চট্টগ্রাম ও বগুড়ায় আওয়ামী লীগ নেতারা রোগীদের নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখছেন।

শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী প্রতিদিন এসব রোগীদের ব্যক্তিগতভাবে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন এবং নির্দেশ দিচ্ছেন প্রয়োজনীয় সবকিছু করার।

সরকারের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত দু’জন রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়েছে। ব্যবস্থা করা হচ্ছে আরও দু’জনকে পাঠানোর। এ কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকন।

তিনি জানান, ফেনীতে এসএসসি পরীক্ষার্থী মিনহাজুল ইসলাম অনিক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল কাদেরকে চোখে মারাত্মক আঘাত থাকায় ভারতের চেন্নাইয়ের শংকর নেত্রালয়ে পাঠানো হয়েছে। একই জেলায় দগ্ধ এসএসসি পরীক্ষার্থী শাহরিয়ার হৃদয় ও গাইবন্ধার ট্রাক ড্রাইভার মো. লিটন মিয়াকে চেন্নাই পাঠানো প্রক্রিয়াধীন।

এদের প্রত্যেকের দেখ-ভাল প্রধানমন্ত্রী সরাসরি করছেন। এমনকী প্রধানমন্ত্রী চেন্নাইয়ে পত্র দিয়েছেন, জানান আশরাফুল আলম খোকন।

ঢাকায় যেসব রোগী রয়েছেন তাদের সঙ্গে একজন স্বজনের হাসপাতাল থেকে খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। চিকিৎসার ব্যয়ভারও বহন করছে সরকার। তবে প্রথম প্রথম কিছু খরচ রোগীর পরিবারকে করতে হয়েছে।

হাসপাতাল ত্যাগের পর যাতে চিকিৎসা ব্যাহত না হয় তার জন্যও প্রধানমন্ত্রী আর্থিক অনুদান দেবেন। স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে আহতদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে নির্দেশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালযের ডা. জুলফিকার লেনিন।

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে আহতদের পরিবারের জন্য ভিজিএফ কার্ডের ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

বার্ন ইউনিট শয্যার তুলনায় রোগীর আধিক্যের কারণে অতিরিক্ত নার্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে ও অতিরিক্ত চিকিৎসকের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১০ জন অতিরিক্ত চিকিৎসক ও ২০ জন নার্স পদায়ন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ের একজন পরিচালককে সার্বক্ষণিক দেখা-শোনার দায়িত্ব দিয়েছেন, তিনি যেখানে যা প্রয়োজন তার ব্যবস্থা নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে।

২০-দলের ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধের পেরিয়েছে ২৬ দিন। জামায়াত-শিবির-বিএনপি নেতাকর্মীদের তাণ্ডবে এরই মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৩০ জনের বেশি। পেট্রোলবোমা ছিলো নারকীয় হত্যাযজ্ঞের মূল অস্ত্র। বাস-ট্রাকে ছোড়া পেট্রোলবোমায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাঁতরাচ্ছেন শিশু-নারী-পুরুষ।

ঢাকা জার্নাল, জানুয়ারি ২৭, ২০১৫

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.