পয়মন্ত ভেন্যুতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় জয়

নভেম্বর ২৪, ২০১৪

bangaldesh-1416753810ঢাকা জার্নাল: দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে ৬৮ রানে হারিয়ে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ। প্রথম ওয়ানডেতে ৮৭ রানে জয় পায় বাংলাদেশ। এর মধ্য দিয়ে পয়মন্ত ভেন্যু চট্টগ্রামে ২০১৪ সালের দ্বিতীয় জয় পেল বাংলাদেশ। পাশাপাশি জিম্বাবুুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রামের মাটিতে কোনো ম্যাচ না হারার রেকর্ডটি অক্ষুন্ন রাখল।

রোববার টসে জিতে ব্যাটিং করতে নেমে বাংলাদেশ ৭ উইকেটে ২৫১ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ১৮৩ রানে গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ের ইনিংস।

বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৮০ রান করেন ওপেনার আনামুল হক বিজয়। এছাড়া তামিম ইকবাল করেন ৭৬ রান। উদ্বোধনী জুটিতে তামিম ও আনামুল ১৫৮ রান করেন। এরপরই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। মাত্র ৪৬ রানে ৬ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত মুমিনুলের ৩৩ রানে বাংলাদেশ ২৫১ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায়।

ব্যাটিংয়ে নেমে তামিম ইকবাল ও আনামুল হক বিজয় জিম্বাবুয়ের বোলারদের উপর চেপে বসেন। প্রথম পাওয়ার প্লেতে কোন উইকেট না হারিয়ে ৪২ রান সংগ্রহ করেন।  প্রথম ম্যাচে এই দুই ওপেনার ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সঠিক পথে এগুতে থাকেন তারা দুজন। দুই ব্যাটসম্যানই অর্ধশতক তুলে নেন।

তামিম ৭১ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে ক্যারিয়ারের ২৭তম অর্ধশতক তুলে নেন। তামিমের পর আনামুল ৮৩ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অর্ধশতকের দেখা পান।

অর্ধশতকের পর দ্রুত রান তুলে নেন তামিম। ক্যারিয়ারের পঞ্চম শতকের পথে এগুতে থাকেন। কিন্তু দলীয় ১৫৮ রানে দূর্ভাগ্যবশত রান আউটের শিকার হন বাহাতি এই ওপেনার। চিগাম্বুরার সরাসরি থ্রোতে রান আউট হন তামিম। ৯৮ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৭৬ রান করেন তামিম।

দলীয় ১৫৮ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। তামিমের বিদায়ের পর কোন রান যোগ না করেই সাজঘরে ফিরেন সাকিব। ভুসিমুজি সিবান্দার বলে সরাসরি বোল্ড হন সাকিব। সাকিবের বিদায়ের পর মুশফিক ও বিজয় ১৫ রান যোগ করেন। কিন্তু ৮০ রান করেই শেষ হয়ে যায় ওপেনার বিজয়ের ইনিংস। পানিয়াঙ্গারার বলে পয়েন্টে সিবান্দার হাতে ক্যাচ দেন বিজয়। ১১০ বলে  ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৮০ রান করেন।

বিজয়ের পর মাঠে  নামেন প্রথম ম্যাচে অভিষেক হওয়া সাব্বির রহমান। কিন্তু দ্বিতীয় বলেই আউট তিনি। এরপর মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ ৩১ রান যোগ করে বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন।

কিন্তু ৪৪তম ওভারের প্রথম ও দ্বিতীয় বলে মাহমুদুল্লাহ (১২) ও মুশফিক (২৭) আউট হলে কম রানে গুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।

এরপর মুমিনুলের শেষ চেষ্টায় রক্ষা হয় বাংলাদেশের। আড়াই শতাধিক রানের সংগ্রহ পায় টাইগাররা। মুমিনুল হক ২৩ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ৩৩ রান করে অপরাজিত থাকেন। মাশরাফি ৬ ও রুবেল হোসেন ৫ রান করেন।

জিম্বাবুয়ের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন কামনুগোজি ও পানিয়াঙ্গারা। ১টি করে উইকেট নেন চাতারা ও ভুসিমুজি সিবান্দা।

২৫২ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই মাশরাফির তোপে পুড়ে জিম্বাবুয়ে। ৪০ রানে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে সাজঘরের পথ দেখান মাশরাফি। দলীয় ১ রানে মাসাকাদজাকে ও ৩৭ রানে সিবান্দাকে বোল্ড করেন নড়াইল এক্সপ্রেস। স্কোরবোর্ডে ৩ রান যোগ করতেই মাশরাফির বলে মাহমুদুল্লাহর অসাধারণ ক্যাচে আউট সিকান্দার রাজা (১৬)।  চাপে থাকা জিম্বাবুয়ে শিবিরে চতুর্থ আঘাতটি করেন আরাফাত সানী। ব্রেন্ডন টেলরকে ব্যক্তিগত ৮ রানে স্লিপে তালুবন্দি করান বাহাতি স্পিনার সানী।

পঞ্চম উইকেটে ঘুরে দাঁড়ায় জিম্বাবুয়ে। চাকাবা ও মোরে ৬৫ রান যোগ করে প্রাথধিক ধাক্কা সামলে নেন। কিন্তু বাংলাদেশি বোলারদের দাপটে বেশিক্ষণ প্রতিরোধ গড়তে পারেনি তারা। দলীয় ১১৫ রানে এই জুটি ভাঙেন আল-আমিন। ঝিনাইদহের এই পেসারের স্লো ডেলিভারীতে মিড অফে ক্যাচ তুলে দেন চাকাবা (৩২)। দৌড়ে ক্যাচটি ধরেন মাশরাফি।

ষষ্ঠ উইকেটে মোরে অধিনায়ক চিগাম্বুরাকে সঙ্গে নিয়ে ২৫ রানের জুটি গড়েন। এ সময়ে মোরে ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক তুলে নেন। জিম্বাবুয়ের হয়ে সর্বোচ্চ রান করা এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানকে ফেরানোর দায়িত্ব নেন সাকিব। তবে পয়েন্টে দাঁড়িয়ে থাকা আরাফাত সানীকে আউটের পুরো কৃতির্ত্বটা দিতেই হবে। ডানদিকে ঝাপিয়ে পড়ে মোরের (৫০) অসাধারণ এক ক্যাচ ধরেন তিনি।

এরপর ৩৮ রান করে চিগাম্বুরা প্রতিরোধ গড়ে তোলার ইঙ্গিত দিলেও শেষ পর্যন্ত পারেনি। সাব্বির রহমানের সরাসরি থ্রোতে রান আউট হয়ে ফিরতে হয় চিগাম্বুরাকে।

দলীয় ১৭৭ রানে চিগাম্বুরা আউটের পর ১৮৩ রানে গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ের ইনিংস। জিম্বাবুয়ের শিবিরের শেষ তিন উইকেট নেন আরাফাত সানী। নিজের শেষ ওভারের প্রথম, চতুর্থ ও পঞ্চম বলে পানিয়াঙ্গারা (৮), নিয়াম্বু (০) ও কামনুগোঝিকে (০) সরাসরি বোল্ড করেন সানী।

২৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে আরাফাত সানী বাংলাদেশের সেরা বোলার। এ ছাড়া ৩৪ রানে ৩ উইকেট নেন মাশরাফি। আল-আমিন হোসেন ও সাকিব আল হাসান ১টি করে উইকেট নেন।

ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা।

আগামী ২৬ নভেম্বর ঢাকায় তৃতীয় ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। ম্যাচটি দুপুর সাড়ে বারোটায় শুরু হবে।

ঢাকা জার্নাল, নভেম্বর ২৩, ২০১৪।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.