হরতাল নয় রোববার বিক্ষোভ

নভেম্বর ৮, ২০১৪

fakrul-0987-1415437244ঢাকা জার্নাল: ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার অনুমতি না দেওয়ার প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। রোববার দেশের সব মহানগরের থানায় থানায় ও সব জেলায় এ কর্মসূচি পালিত হবে।

শনিবার বেলা সোয়া বারোটায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

জনসভার অনুমতি না দেওয়ার প্রতিবাদে শুক্রবার দলের শীর্ষ নেতারা প্রাথমিকভাবে হরতালের সিদ্ধান্ত নিলেও শেষ পর্যন্ত সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে দলটি। শনিবার সকালে নয়াপল্টনে ওই নেতারা আবারো সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন। সেখানে চলমান জেএসসি পরীক্ষার কথা চিন্তা করে হরতালের পরিবর্তে বিক্ষোভ কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তারা।

মির্জা আলমগীর জানান, জনসভাটির জন্য গত ৩০ অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহারের জন্য পিডব্লিউডির কাছে এবং মাইক ব্যবহারের জন্য ডিএমপির কাছে অনুমতি চাওয়া হয়। কিন্তু শুক্রবার রাত ১১টা পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও শেষ পর্যন্ত অনুমতি দেওয়া হয়নি।

তিনি বলেন, দেশে আইনের শাসন না থাকার পরও যেটুকু আইন আছে বিএনপি তা মেনে চলে। কিন্ত সভা-সেমিনারের মতো সাংবিধানিক অধিকারের কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে সরকার গণতন্ত্রের শেষ স্পেসটুকুও ধ্বংস করেছে।

‘৭নভেম্বর দেশ অন্ধকার থেকে আলোর পথে এসেছিল’ উল্লেখ করে বিএনপির এ ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, এই দিন যারা পালন করে না বা করতে দেয় না; তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-স্বার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না। এ দিনকে অস্বীকার করা বাংলাদেশকে অস্বীকার করার শামিল বলে মনে করেন তিনি।

পুলিশ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে ভিন্ন আচরণ করছে অভিযোগ করে বিএনপির এ মূখপাত্র বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ ও ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে অহরহ সভা সমাবেশ করলেও বিএনপিকে কোনো জায়গায়ই পুলিশ অনুমতি দেয় না। পুলিশ এতটাই ক্ষমতাধর হয়ে গেছে যে বিএনপিকে মিছিল পর্যন্ত করতে দেয় না।

 মির্জা আলমগীর বলেন, ‘সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে এখন সম্পূর্ণভাবে পুলিশের ওপর নির্ভর করছে। আর পুলিশও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ভাষায় কথা বলছে। দেশের গণতন্ত্র এখন পুলিশের বুটের নিচে। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিভাবে দেউলিয়া হওয়ার কারণেই পুলিশের ওপর নির্ভর করছে।’

 তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে ‘চতুর্থ মীরজাফর’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। ওই বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে মির্জা আলমগীর বলেন, ‘তার এ ধরনের মন্তব্যের ধিক্কার জানাই। তিনি ৩০ হাজার জাসদ নেতাকর্মীর সঙ্গে বেঈমানী করেছেন। শেখ মুজিবকে উৎখাত করার জন্য যারা সশস্ত্র বিপ্লব করেছিল, নেতৃত্ব দিয়েছিল- সেই দল এখন ভোটের অধিকার হরণকারী আওয়ামী লীগের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। তথাকথিত আদর্শ বিসর্জন দিয়েছে।’

 বিএনপির গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা না দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস বলেন, ‘একের পর এক অহিংস কর্মসূচিতে বাধা দিলে এক সময়ে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাবে। আশা করি, ভবিষ্যতে সরকার বিএনপির গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা না দিয়ে সহযোগিতা করবে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইসচেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী,  শিক্ষা বিষয়ক সমম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম, ঢাকা মহানগরের বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সহ তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, সহ-দফতর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি, আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা জার্নাল, নভেম্বর ৯, ২০১৪।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.